দুদকের কাজে গতি চাই

11

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠনের পর থেকে জনমনে এ প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল যে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে দ্রুতই দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন সাড়াও জাগিয়েছিল। কিন্তু এখন অভিযোগের অনুসন্ধান ও মামলার তদন্তে দেখা দিয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও অনুসন্ধান ও তদন্তের কাজ শেষ হচ্ছে না। দুদকের অনুসন্ধান বা তদন্তের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়া নথির সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এসব নিয়ে দুদক চেয়ারম্যানের অসন্তোষ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত বা অনুসন্ধান শেষ করতে না পারা কর্মকর্তাদের গাফিলতি কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদক কর্মকর্তাদের ডেকে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কয়েক দফা মিটিংও করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে তদন্তের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আছে, যদিও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ হয়েছে—এমন নজির খুব কম। আবার দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ার পর তা অনুসন্ধানের জন্যও সময় নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধানের কাজ শেষ হয় না। চলতি বছরের শুরুতে দুদক চেয়ারম্যান কর্মকর্তাদের ডেকে ৩১ মার্চের মধ্যে ঝুলে থাকা তদন্ত ও অনুসন্ধানের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিলেও ওই সময়ের মধ্যে তদন্তাধীন বা অনুসন্ধানাধীন নথির কাজ শেষ হয়নি। বেশ কয়েকটি মামলা নিয়ে হাইকোর্টও সম্প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। দুদক আইনে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত যেকোনো অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ১৫ কর্মদিবস। এরপর আরো ১৫ দিন সময় পান অনুসন্ধান কর্মকর্তা। মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে দুদক কর্মকর্তারা সময় পান ১২০ কর্মদিবস। পরে এটি আরো ৬০ কর্মদিবস বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। কোনো কোনো মামলার তদন্ত ঝুলে আছে ১৫ বছর ধরে।
দুদকে যেসব অভিযোগ আসে, সেসব অভিযোগ অনুসন্ধান কষ্টসাধ্য হতেই পারে। আবার অল্প সময়ের মধ্যে সব কাগজপত্র সংগ্রহ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। জনবলের সংকটও থাকতে পারে। দুদক নিজেরাই এসব সমস্যার সমাধান করার সামর্থ্য রাখে। আমরা আশা করব, ঝুলে থাকা মামলার তদন্ত ও অভিযোগের অনুসন্ধানের কাজটি দ্রুততম সময়ে শেষ করবে দুদক।