স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বুক চিরে বহমান সুরমা নদী। দুই ভাগে বিভক্ত নগরীর সেতুবন্ধন কীনব্র্রিজ। ব্রিটিশ আমলের স্মৃতিবিজড়িত লোহার ব্রিজটি আজো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে মানুষের প্রয়োজনে। শতবর্ষী সেতু দিয়ে গতকাল রবিবার থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতোদিন গাড়ি চলাচল করলেও এখন থেকে লোকজন হেঁটে চলাচল করবেন এ ব্রিজে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, প্রায় ১১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট গ্রস্থের ব্রিজটি এখন থেকে হেরিটেজের অংশ হিসেবে থাকবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রিজটিতে বিউটিফিকেশনের কাজ করা হবে। এছাড়া ব্রিজটি সুরক্ষায় কিছু সংস্কার কাজ চলবে।
সুরমার উপর অবস্থিত কীনব্রিজের নামকরণ হয়েছিল আসাম প্রদেশের গর্ভনর মাইকেল ক্বিন’র নামে। আসাম প্রদেশের গভর্ণর ছিলেন মাইকেল কীন (১৯৩২ থেকে ১৯৩৭)। তিনি সিলেট সফরে আসতে চাইলে সুরমা নদীতে ব্রিজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তখন আসামের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ট্রেন। ফলে রেলওয়ে বিভাগ ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এবং নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে ব্রিজটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। ব্রিজ নির্মাণে তৎকালীন সময়ে ব্যয় হয়ে ছিল প্রায় ৫৬ লাখ টাকা। গর্ভনর মাইকেল কীনের নামে এ সেতুর নামকরণ করা হয় কীনব্রিজ। কীন ব্রিজটি লোহা দিয়ে তৈরি। এর আকৃতি ধনুকের ছিলার মতো বাঁকানো। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানিরা ডিনামাইট দিয়ে ব্রিজের উত্তর পাশের একাংশ উড়িয়ে দেয়। যা স্বাধীনতার পর কাঠ ও বেইলি পার্টস দিয়ে মেরামত করা হয় ও হালকা যান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগিতায় ব্রিজের বিধ্বস্ত অংশটি কংক্রিট দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়। এর আগে দু’বার বড় ধরনের সংস্কার করা হয় কীনব্রিজে।
সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ব্রিজটিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে যানচলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। গতকাল রবিবার থেকে তা কার্যকর হয়।