মশা নিধনের বিকল্প নেই

22

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে এলেও আশঙ্কামুক্ত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগ ছড়ানোর সবচেয়ে উপযোগী সময় ধরা হয়। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছে, থেমে থেমে বৃষ্টি হলে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওদিকে ঢাকার চেয়ে ডেঙ্গুর আতঙ্ক এখন গ্রামে বেশি। গত এক সপ্তাহের পরিসংখ্যানও একই বার্তা দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনই ঢাকার বাইরে অনেক বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মশাবাহিত এ রোগটি সর্বত্র ছড়াচ্ছে এডিস মশা। কিন্তু ঢাকার সঙ্গে ঢাকার বাইরের পার্থক্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাধারণ এডিস বা এডিস ইজিপ্টাই মশা নয়, ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গু রোগ ছড়ানোর পেছনে এডিস এলবোপিক্টাস নামে একটি প্রজাতি দায়ী। এদের মধ্যে ইজিপ্টাই ঢাকা বা শহরাঞ্চলে বেশি থাকে। আর এর বাইরে গ্রামাঞ্চলে এডিস এলবোপিক্টাস বেশি দেখা যায়। এডিস এলবোপিক্টাস মশার কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ধরনের মশা ঘরের ভেতরে না, বাইরে থাকে। এডিস ইজিপ্টাইয়ের মতো এডিস এলবোপিক্টাস যেকোনো জায়গায় স্বচ্ছ পানি পেলেই বংশবৃদ্ধি করে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ জন্য বিশেষ ধরনের পরিবেশের দরকার হয়। এডিস এলবোপিক্টাস যেখানে জন্মায় তার মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে গাছের কোটর। এ ছাড়া রয়েছে বাঁশঝাড়। মূলত বাঁশ কাটার পর সেখানে থেকে যাওয়া গোড়ায় জমে থাকা পানি এবং কলাগাছের দুটি পাতা বা কচুগাছের দুটি পাতার মাঝখানে যে পানি জমে, সেখানেও এই এলবোপিক্টাস জন্মায়।
এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংস করা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপকভাবে মশার ওষুধ ছিটাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, প্রয়োজন হলে সারা দেশে এক বা দুই দিনের জন্য স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত ছুটি ঘোষণা করে সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একযোগে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সরকার বা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কোনো অবহেলা আছে কি না, অবহেলা থাকলে সেটা কার দায়, মশা নিয়ন্ত্রণে কার কী দায়িত্ব ছিল, তা তদন্তে কমিটি গঠন বিষয়ে আদেশ দেননি হাইকোর্ট।
আমরাও চাই মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। প্রকৃতিতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি না করে এমন ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হোক।