শোকের মাস আগষ্ট

114

কাজিরবাজার ডেস্ক :
“..প্রগাঢ় চুমুর আল্পনা/ এঁকে দিচ্ছিস সুগভীর আলিঙ্গনে/ তাতেই লেখা হয়ে যাচ্ছে আপনা-আপনি আমার নাম/ লোক-দেখানো ছবি আর ফলকে কী এসে যায়?/ বাংলার, হে তরুণ পরিব্রাজক/ হে অক্লান্ত কারিগর/ আমি নই/ আজ থেকে তুই নিজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর।”
কবি আখতার হুসেন তাঁর ‘আজ থেকে তুই নিজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর’ কবিতায় এভাবেই জাতির পিতাকে স্মরণ করেছেন। বাঙালী জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগষ্টের আজ চতুর্থ দিন। সর্বত্রই শোকের আবহ। রাজধানীসহ সারাদেশেই বিশাল বিশাল কালো পতাকা, ব্যানার, ফেষ্টুন, পোষ্টার টাঙ্গানো হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাতে নানা শ্লোগান-কবিতা শোভা পাচ্ছে।
নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শোকাতুর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শোকের নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ‘৭৫-এ ইতিহাসের নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম এই হত্যাযজ্ঞের পর থেকেই বাঙালি ১৫ আগষ্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং পুরো মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে আসছে।
শোকের মাসের চতুর্থ দিনেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন শোকর‌্যালি, আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) সদর দফতর এবং ঢাকা কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে সেমিনার কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত বিষধর সাপকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। নতুবা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতা হুমকির মুখে থাকবে। উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তির পথ হুমকির মুখে থাকবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের পেছনে যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি জড়িত ছিল, সেই শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও জামায়াতিরা বঙ্গবন্ধুকে মেনে নিতে পারে নাই। এই বিষধর সাপ চুপিসারে ছিল আর সময়ের অপেক্ষা করেছে। সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির মধ্যে বিভ্রান্তি এবং বিভক্তি; এই দুইটি থাকার কারণে একাত্তরের পরাজিত শক্তি সাহস পেয়েছিল এবং তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছিল। আমরা সেদিন সতর্ক ছিলাম না বলেই ষড়যন্ত্রে সফল হয়েছিল।
নানক আরও বলেন, আমরা বিষধর সাপকে চিনতে পারিনি! তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে। তারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে মিলে ২১টি বছর শাসন এবং শোষণ করেছে। এই ২১ বছর যাবত বাঙালি শুধু স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা শুনেছে, ইতিহাস বিকৃতির কথা শুনেছে। এই জাতি আবার পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ হয়। সেই থেকে মুক্তির জন্য শেখ হাসিনা নীরবচ্ছিন্ন লড়াই করেছেন। তাই আমাদের পরিষ্কার কথা, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত, অপারেশনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের পেছনে, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি জড়িত রয়েছে, এবারের ১৫ আগষ্টে আমাদের উদাত্ত আহ্বান থাকবে, আমাদের দাবি থাকবে, আমাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে, সেই মদদদাতা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মুখোশ উন্মোচন করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আইইবি’র প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আইইবির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট নুরুল হুদা প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শিবলু।