কাজিরবাজার ডেস্ক :
কলকাতার বেকার গভর্ণমেন্ট হোস্টেলে উন্মোচিত হলো বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্য।
শনিবার বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ইসলামিয়া কলেজ-বর্তমানে মওলানা আযাদ কলেজের বেকার গভর্ণমেন্ট হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটির উম্মোচন করেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, পশ্চিমবঙ্গের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জাভেদ খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪২ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ;যা এখন মওলানা আজাদ কলেজ, সেখানে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়ে স্মিথ স্ট্রিটের বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন।
এ সময় বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটি উম্মোচন করে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু বেকার হোস্টেলের যে কক্ষে থাকতেন সেখানে তার আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করতে পারাটা গর্বের বিষয়।
মো. তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এ বছরের মার্চ মাসে তিনি ভারত সফরে এসে বেকার হোস্টেল পরিদর্শনকালে জাতির জনকের ভাস্কর্য দেখেছিলেন এবং মনে করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর আসল চেহারার সঙ্গে ভাস্কর্যটির অমিল রয়েছে। তখন তিনি বাংলাদেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানান। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর একটি সাদৃশ্যপূর্ণ ভাস্কর্য নির্মাণ করে কলকাতার বেকার হোস্টেলে প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত দেন।পরবর্তীতে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সার্বিক সহযোগিতার কথা বলেন।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্কের কথা এবং এ দেশে বঙ্গবন্ধুর যে সকল স্মৃতি আছে তা সংরক্ষণ করে একটি সংগ্রহশালা নির্মাণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেছেন ভাস্কর লিটন পাল রনি।
প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সরকারি বেকার হোস্টেলটি রয়েছে কলকাতার শিয়ালদহের কাছে ৮ স্মিথ লেনে। ১৯১০ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় এই বেকার হোস্টেল। এটি সরকারি ছাত্রাবাস। বঙ্গবন্ধু কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ডিগ্রি পড়ার সময় এ বেকার হোস্টেলে ছিলেন ১৯৪৫-৪৬ সালে। সেখানকার ২৪ নম্বর কক্ষে ছিলেন তিনি। ইসলামিয়া কলেজের নাম পরিবর্তন করে এখন নামকরণ করা হয়েছে মৌলানা আজাদ কলেজ।
পরে ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে বেকার হোস্টেলের ২৩ ও ২৪ নম্বর কক্ষ নিয়ে গড়া হয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ। এ স্মৃতিকক্ষে এখনো রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত খাট, চেয়ার, টেবিল ও আলমারি। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ২৪ নম্বরের পাশের ২৩ নম্বর কক্ষটিকে যুক্ত করে স্মৃতিকক্ষ গড়ার উদ্যোগ নেন। ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক সত্যসাধন চক্রবর্তী।