আসন্ন ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়ন মাথায় রেখেই। ফলে এটি একক অর্থবছরের জন্য প্রণীত হলেও ২১ বছর তথা ২০৪১ সাল পর্যন্ত কালপর্বটি বিবেচনায় নেয়া হবে। মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এফবিসিসিআইয়ের যৌথ পরামর্শ কমিটির সভায় প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে বিষয়টি উঠে আসে। উল্লেখ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বর্তমান সরকারের। ভ্যাট ও ট্যাক্স নীতি নিয়েও সভায় আলোকপাত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তাতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, আগামীতে ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায় নিয়ে কাউকে আর হয়রানি করা হবে না। যারা এতদিন কর দিয়ে এসেছেন এবার তারা কম দিবেন, আর যারা সক্ষমতা থাকার পরও কর দেননি তারা এবার সূচনা করবেন। শুধু তাই নয়, আগামী পাঁচ বছর কর হার কমবে, বাড়বে না এমন আশ্বাসও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে করনেটের আওতা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি আয়কর আইনও সহজ করা হবে। একজন যোগ্য অর্থমন্ত্রী দেশবাসীকে সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্ন দেখান। স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ইঙ্গিত থাকাও যে জরুরী সে কথা বলাই বাহুল্য। বাজেট হলো রাষ্ট্রের ব্যয় এবং উপার্জনের পথনির্দেশ। লক্ষণীয় যে, জাতীয় বাজেটের আকার ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে। যদিও বিগত বাজেটসমূহের ধারাবাহিকতাও থাকে নতুন বাজেটে। আমরা লক্ষ্য করেছি ইতোপূর্বে প্রতিটি বাজেটেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আকার বেড়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের জনবহুল দেশগুলোর একটি। আমাদের জাতীয় আয় বাড়ছে, বাড়ছে অর্থনীতির আকারও। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। তাই প্রতিবছরই বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বাজেট হচ্ছে কোন সরকারের উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়নের ভিত্তি। অতীতে দেখা গেছে বাজেট প্রণয়ন করা হলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তারপরও বাস্তবায়নের হার বাড়াতে প্রচেষ্টা ও কর্মদক্ষতা অত্যন্ত জরুরী।
তবে অর্থমন্ত্রী সব ধরনের রফতানি পণ্যে প্রণোদনা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এটি অর্থনীতির সচলতার জন্য উত্তম পদক্ষেপ।
উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য যে বাজেট প্রণীত হবে সেটিতে দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার চুলচেরা বিশ্লেষণের এবং দূরদর্শিতার প্রতিফলন ঘটবে- এমনটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই দেশটিকে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যেতে হলে সর্বস্তরেই দেশপ্রেম ও আন্তরিকতা জরুরী। সততা, পরিশ্রম ও গতিশীলতা আগামী দুই দশকের মধ্যে আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমিকে বিশ্ব দরবারে উচ্চাসনে বসাবে- এমনটাই প্রত্যাশা।