নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ এক নতুন মাত্রা পেয়েছে; যদিও মসজিদে হামলা কিংবা অভিবাসীবিরোধী হামলার ঘটনা আগেও ঘটেছে। কিন্তু এই হামলার ব্যাপকতা, নিষ্ঠুরতা এবং হামলাকারীর বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বিশ্ববাসীকে স্তম্ভিত করেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় বইছে। গণমাধ্যমে উঠে আসা বক্তব্যে যে বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে, তা হলো এ ধরনের বিদ্বেষকে এখনই মোকাবেলা করতে হবে, তা না হলে আমাদের এর চেয়েও ভয়ংকর পরিণতি দেখতে হতে পারে। অনেকেই রাজনীতির নামে বিদ্বেষ প্রচার বন্ধ করার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে নানা ধরনের অস্থিরতার কারণে বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ভিড় জমিয়েছে। উন্নত দেশের অনেক নাগরিক এটাকে মেনে নিতে পারছে না। সেই সঙ্গে সেসব দেশের কিছু রাজনীতিবিদের অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য মানুষের ক্ষোভকে উসকে দিয়েছে। সেই সঙ্গে মৌলবাদী মুসলমানদের কিছু জঙ্গি কর্মকাণ্ডও উন্নত দেশগুলোতে ইসলামবিরোধী ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠেছে। এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নিউজিল্যান্ডের মসজিদে এক অস্ট্রেলীয় নাগরিকের এমন ঘৃণ্য হামলার মধ্য দিয়ে, যা বিশ্ববিবেককে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সব দেশে, সব ধর্মে, সব সমাজেই অসহিষ্ণু, অপরিণামদর্শী ও উগ্র চরিত্রের কিছু মানুষ থাকে, যাদের যুক্তি, মনুষ্যত্ব ও বিবেকবোধ থাকে না বললেই চলে। নিউজিল্যান্ডের এই হামলাকারীও অনুরূপ একজন মানুষ। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা ও অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব তাই প্রতিটি দেশ, ধর্ম ও সমাজকে নিতে হবে। সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ তৈরি করতে হবে। তা না হলে এ ধরনের হিংসা-বিদ্বেষ বাড়তেই থাকবে এবং বৈশ্বিক অশান্তির কারণ হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমরা চাই, নতুন করে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরির যে নোংরা খেলা দুনিয়াব্যাপী শুরু হয়েছে তার অবসান হোক। বিশ্বনেতৃত্ব এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিক।