ছনি চৌধুরী হবিগঞ্জ থেকে :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদী সংযুক্ত কুশিয়ারার উত্তর পাড়ে পশ্চিম মাধবপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কালনী নামক সরু খালটি লাগাদার ভাঙ্গনের ফলে সরু খাল এখন বিরাট নদীতে পরিণত হয়েছে। ফলে কয়েক শতাদিক পরিবার ভিটে মাটি ছেড়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিগত দিনের টানা বর্ষনে ভয়াবহ ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ৪০টি পরিবারের বসত ঘরবাড়ি।
রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে মাধবপুর গ্রামবাসীর সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে কুশিয়ারা নদী সংযুক্ত এই খালটির ছিল সরু যার প্রস্থ ছিল ৩ থেকে ৪ হাত। কয়েক বছর ধরে পাশ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না করার ফলে প্রতিবছর বাঁধে ভাঙ্গ দেখা দেয় এতে তীব্র ভাঙ্গনের ফলে পর্যায়ক্রমে ভেঙ্গে ভেঙ্গ সরু খালটি এখন বিরাট নদীতে পরিণত হয়েছে। এতে প্রায় শতাদিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এছাড়াও ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে খালের দুই পাড়ের দুইটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ। ইতো মধ্যেই পশ্চিম মাধবপুর বড় জামে মসজিদের সীমানাপ্রাচীর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। খালের ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় যে কোন সময় তলিয়ে যেতে পারে ঐতিহ্যবাহী দুইটি জামে মসজিদ। এই খালের ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করায় মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন প্রায় শতাদিক পরিবারের লোকজন। পশ্চিম মাধবপুর এলাকার মাও. এলাইছ মিয়া বলেন,বাধ অইতো ভালা কথা, স্থায়ী বাঁধ হউক, প্রতি বছর এই অস্থায়ী ভাবে বাঁধ দেওয়ার কারণে যখন ভাঙ্গে তখন ঘরবাড়ি ভাঙ্গিয়া লইয়া যায় আমরা এখন নিরুপায় কই যাইতাম বিভিন্ন জায়গায় দরখাস্ত দিয়াও কোনো সাড়া পাইরাম না।
দীঘলবাক ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম, মসজিদের খতিব কারী ছুনু মিয়া জানান, বিগত ৪ বছর যাবত এই খালের ভাঙন অব্যাহত থাকায় ফসলি জমি ও কয়েকটি পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। যে কোন সময় বিলিন হবে আমাদের ২টি জামে মসজিদ। ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভাঙ্গন অব্যাহত থাকার পরও প্রতিবছর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। অস্থায়ী বাঁধের ফলে পানি আটকে গিয়ে ভাঙ্গন চরম আকার ধারন করে। এতে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হন খালের দুই পাড়ের বাসিন্দা। খালের মুখে অস্থায়ী বাঁধ দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী পশ্চিম মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়াও কুশিয়ারা উত্তর পাড়ের পশ্চিম মাধবপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার ও দুইটি জামে মসজিদকে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করতে স্থায়ী সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর আবেদেন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান জানান, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।