নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু

65

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী আজকের মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী জোট গঠন করতে হবে। এ কাজ সম্পন্ন না হলে জোট থেকে যৌথভাবে মনোনীত প্রার্থী জোটভুক্ত যেকোনো দলের প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ পাবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণার পর সব রাজনৈতিক দলেরই প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। নির্বাচনী তফসিলের আগে রাজনৈতিক সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক জোটগুলোর সংলাপ থেকে কার্যত কোনো সমঝোতা না হলেও আশা ফুরিয়ে যায়নি বলেই পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত। আলোচনার পথও বন্ধ হয়ে যায়নি বলে মনে করা হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার প্রস্তুতির পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি উজ্জীবিত মনে হয়েছে ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগকে। গত শুক্রবার থেকে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। এবারের নির্বাচন যাতে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়, সর্বমহল থেকেই সে ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের দৃষ্টিও নিবদ্ধ আসন্ন নির্বাচনের দিকে।
এবারের নির্বাচনের আগে বড় ধরনের চমক ছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট রয়েছে এই ফ্রন্টে। পরে যোগ দিয়েছে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা পার্টি। সরকারের সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বড় কোনো সমাধান আসেনি তাতে। অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টও সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছে। সংলাপ হয়েছে জাতীয় পার্টির সঙ্গেও। এখন সবার দৃষ্টি নির্বাচনের দিকে। কোন দল কোন এলাকায় কাকে মনোনয়ন দিচ্ছে, তা জানতে আগ্রহী সবাই। একই সঙ্গে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গণসংযোগও অব্যাহতভাবে চলছে।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তবে অংশী তথা রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বও কম নয়। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হয়। নির্বাচন যাতে কোনোভাবেই বিতর্কিত হতে না পারে, সে জন্য নির্বাচন কমিশন সচেষ্ট থাকবে, পাশাপাশি ইসিকে সহায়তা করবে রাজনৈতিক দলগুলো। এ ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলকেই সমানভাবে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বাংলাদেশ এখন নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাই দেশ ও দেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন যাতে সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে, নির্বাচনের পরিবেশ যেন উৎসবমুখর থাকে, সেদিকে সব রাজনৈতিক দলকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমরা আশা করি, সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং সব মহলের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।