স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কাউন্সিলর, চেম্বার নেতৃবৃন্দ, সিসিকের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে এই অভিযান পরিচালনা করেন।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নগর ভবনের সামনে থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। এ সময় নগরীর সুরমা মার্কেট থেকে বন্দরবাজার হয়ে জিন্দাবাজার পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
এ সময় মেয়রের সাথে ছিলেন কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, শান্তনু দত্ত সন্তু, দিনার খান হাসু, রাজিক মিয়া, এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিলেট চেম্বার এর সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ, পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম সহ সিসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।
এর আগে গত সোমবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনে হামলার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সিটি কর্পোরেশনের আইন সহকারী শ্যামল রঞ্জন দেব বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মহানগর হকার্স লীগ সভাপতি আব্দুর রকিব সহ অজ্ঞাত আরো শতাধিক হকার আসামী করা হয়।
হকার নেতা রকিবকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবী : ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বৈঠকে মেয়র অভিযোগ করেন, ফুটপাত ও সড়কে বসতে বাধা দেওয়ায় সোমবার বিকেলে নগরভবনে হামলা চালায় হকাররা। মহানগর হকার্স লীগের সভাপতি আব্দুর রকিবের নেতৃত্বে এ হামলাকালে তাঁর সাথেও অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। মেয়রের এমন অভিযোগের পর উপস্থিত ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী নেতারা আব্দুল রকিবসহ অন্যান্য হামলাকারীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান। সোমবার নগরীর কুমারপাড়াস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোহাম্মদ লালার সভাপতিত্বে সভায় বক্তারা বলেন, হকাররা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ফুটপাত দখল করে রেখেছে। তারা নগরবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। তাদের কারণে ফুটপাতে চলাফেরা দায় হয়ে পড়েছে। নগরীর যানজট কোনভাবেই কমানো যাচ্ছেনা। এমন অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। নগরবাসীর স্বার্থে এখনি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, আদালতের নির্দেশনা, সিসিকের অভিযানের পরও হকাররা বেপরোয়া হয় কি করে! তাদের পেছনে কারা আছে? তাদের খুঁটির জোর কোথায়? এদের চিহিৃত করার সময় এসেছে।
সিলেট চেম্বার এর সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, যারা হকারদের শেল্টার দেয়, তারা নগরীর পাঁচ লাখ মানুষের শক্র। এদের চিহ্নিত করে তাদের সকল কর্মকান্ড বয়কট করতে হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এখন থেকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে হকারদের বসতে দেয়া হবে না। যারা হকারদের বসার স্থান দিবেন, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। চেম্বার সভাপতির এ ঘোষণার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি, ও জেলা ব্যবসায়ী এক্য কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও নগরীর বিভিন্ন মার্কেট, বিপনী বিতান ও শপিং মলের ব্যবসায়ী নেতারা। সভায় হকারদের তান্ডবের চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ সময় তিনি গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে হকার উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখবেন বলে ঘোষণা দেন। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সুজনের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা আব্দুল করিম কিম, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশন ইমজার সভাপতি আশরাফুল কবীর, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, রেজওয়ান আহমদ, আফতাব হোসেন খানসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী, পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।