পেঁয়াজের দাম কমছে

20

শীতের সবজির দাম কমলেও স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। ভোক্তাদের অস্বস্তির কারণ পেঁয়াজ ও চাল।
আমনের মৌসুমেও চালের দাম কমেনি। অথচ কৃষকের মুখে হাসি। কারণ বন্যার পর ফলন ভালো হয়েছে। সরকারও আমন সংগ্রহের জন্য যে দাম নির্ধারণ করেছে, তা অন্যবারের চেয়ে বেশি। কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে তাদের লোকসান হওয়ার কথা নয়। ফলন ভালো হওয়ায় বাজারেও উঠেছে নতুন ধান, কিন্তু তার কোনো প্রভাব বাজারে পড়তে দেখা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত বাজারে চালের দাম কমেনি। বরং আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে। খোলাবাজারের বিক্রেতারা বলছেন, বেশি দামে কেনার কারণেই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। অথচ এ সময়ে চালের বাজার ভোক্তাদের আয়ত্তের মধ্যে এসে স্থিতিশীল হওয়ার কথা। ধারণা করা হচ্ছে, সরকারের মজুদস্বল্পতার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা এখনো কারসাজি করছেন। ওদিকে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কাটেনি। বাজারে সব সময় দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। এবার সরবরাহে কমতি থাকায় এক মাস ধরে পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ধারণা করা হয়েছিল, নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে। কিন্তু তা হয়নি। বাজারে নতুন পেঁয়াজ বলতে যা আসছে, সেটা পাতাসহ পেঁয়াজ। এই সুযোগে নিজেদের মতো করে দাম নির্ধারণ করছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি পাইকারি বাজারে একদিনে কয়েকবার পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করেছে। পেঁয়াজের বাজারের এ অস্থিরতায় ভোক্তাদের পাশাপাশি খুচরা বিক্রেতারাও শঙ্কিত। খুচরা বিক্রেতাদের ধারণা, কয়েক দিন পর নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে বাজার এমনিতেই পড়ে যাবে। পাইকারি বিক্রেতারা এখন সরবরাহ সংকটের সুযোগ নিয়ে বাড়তি লাভ করতে চাইছে।
বাজারের অস্থিরতা কাটাতে হলে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তোলার পাশাপাশি নিজস্ব সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা গেলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে না। টিসিবিকে কাজে লাগিয়ে বছরজুড়ে সরকার এ কাজ করতে পারে। সরকারের সদিচ্ছাই পারে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে। এর প্রমাণ আগে রয়েছে। কিন্তু বাজার থেকে একবার নিয়ন্ত্রণ উঠে গেলে নতুন করে তা প্রতিষ্ঠা করা যায় না। নিয়ন্ত্রণহীন বাজার তখন ভোক্তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থা থেকে ভোক্তাদের মুক্ত করার দায়িত্ব সরকারের।