নবীগেঞ্জ এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের শেষ পর্যায়ে চলছে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মহোৎসব, দরিদ্র অভিভাবক দিশেহারা

39

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
২০১৮ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ ফেব্র“য়ারি। এই পরীক্ষাকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় নবীগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। উপজেলার বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অবিযোগ পাওয়া গেছে। এ ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার সতর্ক করে দেওয়ার পরও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সরেজমিন উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ফি আদায় করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। অতিরিক্ত টাকা আদায় করেও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে না অর্থপ্রাপ্তির কোনো রশিদ। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ভয়ভীতি প্রর্দশনসহ শিক্ষার্থীদের বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড ফি এসএসসির ফরম পূরণে বিজ্ঞান বিভাগে নিয়মিত ১৭০০ টাকা অনিয়মিত ১৮০০ টাকা, মানবিক ও বাণিজ্যিক বিভাগে নিয়মিত ১৬০০, অনিয়মিত ১৭০০ টাকা এবং বিলম্ব ফি সকল বিভাগে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়গুলো নিয়মনীতির বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যে যার মতো করে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। কোন কোন বিদ্যালয় ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকাও আদায় করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, সিলেট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবীগঞ্জ উপজেলায় মোট ৩৩টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করবে। এর মধ্যে স্কুল ১৭ ও মাদ্রাসা ১৬ টি রয়েছে। এসএসসি পরীক্ষায় বাড়তি ফি আদায়কে কেন্দ্র করে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে কোচিং, স্কাউট, বিদ্যুৎ বিল, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন, পাঠাগার, রশিদ, ক্রীড়া, শিক্ষক কল্যাণ ফান্ডসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাভাবে ফরম পূরণ করতে না পেরে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন চোখ ভরা জল নিয়ে। জানা গেছে, দরিদ্র অভিভাবকদের কেউ কেউ সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চড়া সুদে টাকা এনে ফরম পূরণের ব্যবস্থা করছেন। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা চরম হতাশা প্রকাশ করলেও শিক্ষা বোর্ড বা প্রশাসনের কার্যকর কোনো নজরদারি চোখে পড়েনি। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অভিভাবকরা সচেতন মহলের দৃষ্টি কামনা করছেন।