স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রথম ম্যাচে দশ উইকেটে ও দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৪ রানে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে ২০০ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে এত বড় হার আছে কি না সেটা রেকর্ড ঘাটবার বিষয়। তবে, এই হারের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো মাশরাফি বাহিনী। এই সফরে এর আগে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হয় টাইগাররা।
বোলিং ব্যর্থতার পর ব্যাটিংয়ে করুণ দশা। অল্প রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। রবিবার ইস্ট লন্ডনে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৭০ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমে ৪০.৪ ওভারে ১৬৯ রান করে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান সাকিব আল হাসানের। ৬৩ রান করেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সাব্বির রহমানের। ৩৯ রান করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে কাগিসো রাবাদা ১টি, ডেন প্যাটারসন ৩টি, উইয়ান মাল্ডার ১টি, আন্দিল ফেহলাকওয়েও ১টি, ইমরান তাহির ২টি ও এইডেন মার্করাম ২টি করে উইকেট নেন।
এই ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ৩৬৯ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিকদের পক্ষে কুইন্টন ডি কক ৭৩, ফাফ ডু প্লেসিস ৯১ ও এইডেন মার্করাম ৬৬ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি, তাসকিন আহমেদ ২টি ও রুবেল হোসেন ১টি করে উইকেট নেন। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটা দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ রান ছিল ৩৫৮।
টাইগাররা ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় তিন রানে প্রথম উইকেট হারায়। ডেন প্যাটারসনের বলে ফারহান বিহারডাইনের হাতে ক্যাচ হন ইমরুল কায়েস। তার ব্যক্তিহত সংগ্রহ ১ রান। দলীয় ১৫ রানে ডেন প্যাটারসনের বলে এলবিডব্লিউ হন লিটন দাস। তিনি করেন ৬ রান। এরপর দলীয় ২০ রানে কাগিসো রাবাদার বলে স্লিপে এইডেন মার্করামের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার। তিনি করেন ৮ রান।
দলের তৃতীয় উইকেটের পতনের পর সাকিব-মুশফিক জুটির দিকে তাকিয়ে ছিল দল। কিন্তু মুশফিকুর রহিম হতাশ করেন। মাত্র আট রান করে ফিরে যান সাজঘরে। ইনিংসের ১২তম ওভারে আন্দিল ফেহলাকওয়েওর বল তুলে মারেন মুশফিক। বলটি ক্যাচ নেন কাগিসো রাবাদা। দলীয় ৬১ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। উইয়ান মাল্ডারের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। রিয়াদের সংগ্রহ ২ রান।
রিয়াদ ফিরে যাওয়ার পর ৬৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন সাকিব আল হাসানও সাব্বির রহমান। দলের দুরবস্থার মধ্যে ব্যক্তিগত অর্ধশত পূরণ করেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু এরপর ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। ৬৩ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তার ৩৫তম অর্ধশত। ইনিংসের ৩১তম ওভারে এইডেন মার্করামের বলে জেপি ডুমিনির হাতে ধরা পড়েন তিনি।
সাকিব ফিরে গেলে একই ওভারে সাব্বির রহমানও আউট হয়ে যান। উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাব্বির করেন ৩৯ রান। ৩৮তম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি করেন ১৭ রান। ৪১তম ওভারে ইমরান তাহিরের বলে জেপি ডুমিনির হাতে ক্যাচ হন তাসকিন আহমেদ। একই ওভারে এবি ডি ভিলিয়ার্সের হাতে ক্যাচ হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ২০০ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস: ৩৬৯/৬ (৫০ ওভার)
(টেম্বা বাভুমা ৪৮, কুইন্টন ডি কক ৭৩, ফাফ ডু প্লেসিস ৯১, এইডেন মার্করাম ৬৬, এবি ডি ভিলিয়ার্স ২০, ফারহান বিহারডাইন ৩৩*, উইয়ান মাল্ডার ২, আন্দিল ফেহলাকওয়েও ৫, কাগিসো রাবাদা ২৩*; মাশরাফি বিন মর্তুজা ০/৬৯, মেহেদী হাসান মিরাজ ২/৫৯, রুবেল হোসেন ১/৭৫, সাকিব আল হাসান ০/৫৬, তাসকিন আহমেদ ২/৬৬, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/৩৩, সাব্বির রহমান ০/৮)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১৬৯ (৪০.৪ ওভার)
(ইমরুল কায়েস ১, সৌম্য সরকার ৮, লিটন দাস ৬, মুশফিকুর রহিম ৮, সাকিব আল হাসান ৬৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২, সাব্বির রহমান ৩৯, মেহেদী হাসান মিরাজ ১৫, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৭, তাসকিন আহমেদ ২, রুবেল হোসেন ০*; কাগিসো রাবাদা ১/৩৩, ডেন প্যাটারসন ৩/৪৪, উইয়ান মাল্ডার ১/৩২, আন্দিল ফেহলাকওয়েও ১/১৩, ইমরান তাহির ২/২৭, এইডেন মার্করাম ২/১৮)।