স্পোর্টস ডেস্ক :
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সফরের দ্বিতীয় টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বেনোনিতে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সময় তামিম ইকবাল চোট পেয়েছিলেন বাঁ-পায়ের পেশিতে। এরপর চোট থেকে পুরোপুরি সেরে উঠার আগেই আবারো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নেমে ছিলেন পচেফস্ট্রুমে টেস্টে। যা শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ওপেনারের জন্য।
পচেফস্ট্রুম টেস্টে স্বাগতিক প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ফিল্ডিং করার সময় প্রস্তুতি ম্যাচে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া একই স্থানে আবারো চোট পান ২৮-বছর-বয়সী এই ব্যাটসম্যান। এর জন্য অনেকক্ষণ মাঠের বাইরেও অবস্থান করতে দেখা যায় তাকে। পরে চোট নিয়েই লড়াই করে গেছেন স্বাগতিকদের বিপক্ষে।
প্রথম টেস্ট শেষে তামিমের চোটের ধরণ জানতে স্থানীয় এক চিকিৎসকের সহযোগিতা নেয়া হয়। বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসকের মতে চোট থেকে সেরে উঠতে চার সপ্তাহের বিশ্রাম প্রয়োজন দেশ সেরা ওপেনারের। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় টেস্ট তো বটেই দক্ষিণ আফ্রিকাদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন বাঁ-হাতি এই ওপেনার।
তবে আশার বাণী হচ্ছে জাতীয় দলের ফিজিও বলছেন ১০ থেকে ১২ দিন ভালোমতো বিশ্রাম নিলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারবেন তামিম। যার ফলে, ওয়ানডে সিরিজে তাকে নিয়ে এখনো আশাবাদী টিম ম্যানেজমেন্ট।
তবে দলের সেরা ব্যাটসম্যানকে ছাড়াই দ্বিতীয় টেস্টে রাবাদাদের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের। দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে তাঁর না থাকার ফলে সৌম্য সরকারের সাথে ইনিংসের গোড়াপত্তন করার আরো একটি সুযোগ মিলছে ইমরুল কায়েসের ভাগ্যে। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টের দলে কায়েস বাদ পড়ছেন এমনটা ভাবা হলেও, নিজেকে প্রমাণ করার সম্ভাব্য শেষ সুযোগ পাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি ৬ অক্টোবর থেকে ব্লুমফন্টেইনে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রস্তুতি ম্যাচে ডুমিনি-ভিলিয়ার্স : বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে প্রস্তুতি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের স্কোয়াডে আছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও জেপি ডুমিনিকে। ব্লুমফন্টেইনে ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে এই অনুশীলন ম্যাচ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তবে একদিনের সিরিজে খেলবেন এই ক্রিকেটার। তারই প্রস্তুতি হিসেবে অনুশীলন ম্যাচের স্কোয়াডে থাকছেন ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এ পর্যন্ত ২২২টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। ২১৩ ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন ৯৩১৯। ব্যাটিং গড় ৫৩.৫৫। অন্যদিকে স্ট্রাইকরেট ১০০.২৫। ৫৩টি অর্ধশতকের পাশাপাশি আছে ২৪টি শতক। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ১৬২।
এদিকে কিছুদিন আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন জেপি ডুমিনি। তবে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে দেশের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন ডুমিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র অনুশীলন ম্যাচের স্কোয়াডেও আছেন এই ক্রিকেটার। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এ পর্যন্ত ১৭৭টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন জেপি ডুমিনি। ১৬০ ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন ৪৬৩৮।
ডুমিনির ব্যাটিং গড় ৩৭.৭০। অন্যদিকে স্ট্রাইকরেট ৮৩.৪৩। ২৪টি অর্ধশতকের পাশাপাশি আছে চারটি শতক। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ১৫০।
ভিলিয়ার্স, ডুমিনি ছাড়াও চলতি বাংলাদেশের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট স্কোয়াড থেকে অনুশীলন ম্যাচের স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন এইডেন মারক্রাম এবং কেশভ মহারাজ।
আগামী ১৫ অক্টোবর শুরু হবে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজ। এর আগে ১২ অক্টোবর হবে এই অনুশীলন ম্যাচ।
দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ : জেপি ডুমিনি (অধিনায়ক), ম্যাথ্যু ব্রিজকে, এমবুলেলো বুদাজা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, রবি ফ্রাইলিঙ্ক, বরান হেন্ড্রিকস, হেইনরিক ক্লাসেন, কেশভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম, উইয়ান মালডার, মালুসি সিবোতো ও খায়া জোন্ডো।