স্পোর্টস ডেস্ক :
সেই তেজ আর দেখা যাচ্ছে না স্টিভ স্মিথদের মধ্যে। শরীরী ভাষাতেও নিস্তেজ ভাব। এটাই কী দুর্বলতম অস্ট্রেলিয়া দল? সে প্রশ্নও উঠে গেছে। অথচ এই বছরের শুরুতেই টেস্ট সিরিজে চনমনে অসিদের দেখা গিয়েছিল। সিরিজ হারলেও লড়াই করেছিলেন স্মিথরা। জোর কথার লড়াই হয়েছিল বিরাটের সঙ্গে। এই অস্ট্রেলিয়া কিন্তু স্লেজিংও করছে না। অন্তত একদিনের সিরিজে তো কথার লড়াই হয়নি দু–দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে। কিন্তু কেন?
ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর সেহবাগ মনে করেন, আগামী বছর আইপিএলে ভালো দাম পাওয়ার জন্যই অসি ক্রিকেটাররা চুপচাপ রয়েছেন। সেহবাগের কথায়, ‘আগামী বছর আইপিএল নিলাম হবে। তাই স্লেজিংয়ের রাস্তা থেকে সরে এসেছে অসিরা। ওরা জানে স্লেজিং করলে ভারতীয় ফ্রাঞ্চাইজিরা বেশি দামে ওদের কিনবে না। নিলামে দর কম উঠবে।’
সেহবাগ অবশ্য মনে করেন এই অস্ট্রেলিয়া বড্ড বেশি স্মিথ, ওয়ার্নার, ফিঞ্চ নির্ভর। দলগত পারফরম্যান্স করতে না পারলে ভারতকে হারানো যে অসম্ভব তাও স্মিথদের মনে করিয়ে দিয়েছেন বীরু, ‘এই অস্ট্রেলিয়া ভয়ানক চাপের মধ্যে রয়েছে। সেরা ক্রিকেটারের অভাব রয়েছে। দলটা তো স্মিথ, ওয়ার্নার এবং ফিঞ্চের উপর নির্ভরশীল।’
হেরাথের প্রশংসা করলেন চান্ডিমাল : আবুধাবি টেস্টে ১১ উইকেট শিকার করে পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলংকাকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দেয়া বাঁ-হাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের প্রশংসা করলেন শ্রীলংকা অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল। তিনি বলেন, ‘হেরাথ একজন টিম ম্যান। তার বোলিং নৈপুণ্যে ছিলো সত্যিই অসাধারণ। সে বিশ্বের অন্যতম সেরা এক স্পিনার।’
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪১৯ রান করেও লিড নিতে পারেনি শ্রীলংকা। কারণ প্রথম ইনিংসে ৪২২ রান তুলে ৩ রানের লিড নেয় পাকিস্তান। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৩৮ রানেই গুটিয়ে গেলে পাকিস্তানের সামনে জয়ের জন্য মাত্র ১৩৬ রানের মামুলি টার্গেট দিতে সক্ষম হয় শ্রীলংকা। এই টার্গেট টপকে যাওয়া কোন ব্যাপারই ছিলো পাকিস্তানের জন্য।
কিন্তু পাকিস্তানের স্বপ্ন চুরমার করে দেন হেরাথ। ৪৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে ২১ রানে হারের লজ্জায় ডুবান তিনি। হেরাথের সাথে তাল মিলিয়ে বোলিং করেছেন দিলরুয়ান পেরেরাও। ৪৩ রানে তার ৩ উইকেটও পাকিস্তানের সর্বনাশের তালিকায় পড়ে।
তাই অবিস্মরণীয় জয়ের পর হেরাথের প্রশংসা করেছেন চান্ডিমাল। তিনি বলেন, ‘আমার পুরো ক্যারিয়ারে হেরাথকে আমি চাই। আমার কোন ধারণা নেই, সে কতদিন খেলবে কিন্তু আমি নিশ্চিত তিনি দলের জন্য যা করতে পারেন তাই করবেন। হেরাথ একজন টিম ম্যান। সে আমাকে এবং দলের অন্যান্য খেলোয়াড় সহায়তা করে। প্রত্যকটি তরুণ খেলোয়াড় বোলিং ও অভিজ্ঞতা নিয়ে তার সাথে আলোচনা করে।’
হেরাথের পাশাপাশি দলের প্রশংসাও করলেন চান্ডিমাল, ‘ম্যাচ শুরু আগে খেলোয়াড়রা অনেক বেশি পরিশ্রম করেছে এবং সেই পরিশ্রমের ফসল তারা পেয়েছে। দল হিসেবে সম্প্রতি আমরা ভালো করতে পারছিলাম না। কিন্তু আমরা একটি জয়ের অপেক্ষায় ছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত আমরা তা করতে পেরেছি। সকল কৃতিত্বই খেলোয়াড়দের। তারা সত্যিই অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছে এবং আমি আশা করছি সিরিজের বাকী সময়েও ভালো পারফরমেন্স অব্যাহত থাকবে। আমাদের ফিটনেস ও ফিল্ডিং নিয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে। অনুশীলনে সবাই নিজেকে উজার করে দিচ্ছে এবং ম্যানেজমেন্টও অনেক পরিশ্রম করছে।’
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলার ৪০ রান ছিলো এই ইনিংসে সর্বোচ্চ। মহাবিপদের সময়ে ছোট্ট হলেও গুরুত্বপূর্ণ খেলেছেন ডিকবেলা। তাই ডিকবেলার প্রশংসা করতে ভুলে যাননি চান্ডিমাল, ‘চতুর্থ দিনের শেষ সময়টা ছিলো খুবই কঠিন। দ্রুতই আমরা উইকেট হারিয়েছিলাম। এসময় ধৈর্য্য ধরে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ডিকবেলা। তারপরও আমরা জয়ের জন্য ১৬০ রানের পুঁজি চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটি না হলেও, ডিকবেলার গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসে পুঁজি ১৪০-এর কাছাকাছি হয়। আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, হেরাথ তার সেরাটা দিতে পারলে আমরা জিততে পারবো।’