কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর চা বাগানের শ্রমিক বলরাম নুনিয়ার (৫০) ছেলে পান ব্যবসায়ী সুমন নুনিয়া (২৪) বোনের বাড়ি যাচ্ছেন বলে গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এর পর থেকে নিখোঁজ হলেও তিন দিন পর সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মিরতিংগা চা বাগানের নালায় মস্তকবিহীন অবস্থায় নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।
মাধবপুর চা বাগান ও কমলগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর চা বাগানের বলরাম নুনিয়ার সাত সন্তানের মাঝে তৃতীয় সন্তান পান ব্যবসায়ী সুমন নুনিয়া একই উপজেলার মিরতিংগা চা বাগানে ছোট বোন মুন্নী নুনিয়ার (২২) বাড়ি যাচ্ছে বলে শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। শুক্রবার রাত আটটায় সে (সুমন নুনিয়া) মুঠোফোনে (০১৭২৪০০৪৮৩৪) কথা বলার পর থেকে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পায়নি। সোমবার দুপুরে মিরতিংগা চা বাগানের ২০ নং সেকশনের গুটি বাড়ীর একটি নালাতে মস্তকবিহীন অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ দেখতে পান বাগান পাহারাদার কৃষ্ণ অলমিক। এ ঘটনার খবর পেয়ে বিকাল সোমবার সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
মঙ্গলবার এসআই ফরিদ উদ্দীনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হত্যাকারী মিরতিংগা চা বাগানের চা শ্রমিক বদরী তন্ত বাই (৫০) ও তার ছেলে কান্ত তন্ত বাই (২৪)কে নিয়ে এ চা বাগানের ৪নং প্লান্টেশন এলাকার একটি ধানি জমির কাদার নিচ থেকে সন্ধ্যা ৬টায় কাটা মস্তক উদ্ধার করেন। সাথে সাথে হত্যায় ব্যবহৃত দাও উদ্ধার করা হয়। মস্তক উদ্ধার অভিযানের এসআই ফরিদ উদ্দীন ও মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু মস্তক ও দা উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ দিকে মঙ্গলবার দুপুরে মাধবপুর চা বাগানে সুমন নুনিয়ার বাসায় গিয়ে দেখা যায় তার আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে।
এ দিকে মঙ্গলবার মিরতিংগা চা বাগনে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এ চা বাগানের চা শ্রমিক বদরী তন্ত বাই (৫০) ও তাপর ছেলে কান্ত তন্ত বাই (২৪)কে পুলিশ আটক করে। কমলগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে আটক বাবা বদরী তন্ত বাই ও ছেলে কান্ত তন্তবাই সুমন নুনিয়াকে অন্য স্থানে হত্যা করে মস্তশবিহিন অবস্থা চা বাগানের নালায় ফেলে রাখার কথা স্বীকার করেছে বলে জানা যায়।
কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো: নজরুল ইসলাম লাশের পরিচয় বের হওয়া আর হত্যার সাথে জড়িত বাবা ছেলেকে আটক ও তাদের স্বীকারোক্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নারী ঘটিত ঘটনায় এই হত্যাকান্ড ঘটেছে।