জাফলং বাঁশকলে সরকার নির্ধারিত হারে আদায় হচ্ছে না রয়েলিটি ॥ স্থান নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ

45

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
জাফলং পাথর কোয়ারির বাঁশকলের আঁধার কাটছে না। সরকার নির্ধারিত হারে আদায় হচ্ছে না রয়েলিটি। বিপাকে রয়েছেন ইজারাদারা। এতে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে সরকার ও ইজারাদারা। আবার বাঁশকলের স্থান নির্বাচন নিয়েও দেখা দিয়েছে মতবিরোধ।
জানা গেছে জাফলং পাথর কোয়ারি থেকে উত্তোলিত পাথর ও বালু মিশ্রিত পাথর থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য চলতি বছরের ২২ মার্চ খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ৮টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইজারা প্রদান করে। এ সময় সরকার কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত ১ টাকা ৯৬ পয়সা হারে রাজস্ব আদায় করা হতো। পরবর্তীতে ২৮ মে ২০১৫ইং তারিখে সরকার কর্তৃক আদায়যোগ্য রাজস্বের হার ১০% বৃদ্ধি করে ১ টাকা ৯৬ পয়সার স্থলে ৪ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করে অফিস আদেশ জারি করা হয়। এরপর থেকে ট্রাক মালিক ও চালক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকারের পূর্ব নির্ধারিত রাজস্ব প্রতি ঘনফুট পাথর ও বালু থেকে ১ টাকা ৯৬ পয়সার অতিরিক্ত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিলো। এরই প্রেক্ষিতে ট্রাক শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের পূর্ব নির্ধারিত রাজস্ব বহাল রাখার দাবিতে ইতিপূর্বে তারা একাধিকবার অবরোধ, ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছে। সর্বোপরি সরকার কর্তৃক আদায়যোগ্য রাজস্বের হার ১০% বৃদ্ধি করায় বর্ধিত হারে রাজস্ব না দেয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ট্রাক মালিক ও চালক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে রাজস্ব আদায় করতে না পারায় কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে সরকার ও ইজারাদারা। আবার
বাসকলের রয়েলিটি আদায়ের স্থান নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে মত বিরোধ। রয়েলিটি আদায় ও এর স্থান নির্ধারণ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রশাসন, ইজরাদার ও শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে ইতিপূর্বে একাধিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংকট নিরসনের জন্য সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি কমিটির নেতৃবৃন্দরা জাফলং কোয়ারি এলাকা ও রাজস্ব আদায়ের স্থান পরিদর্শন করেছেন।
ইজারাদার বশির মিয়া জানান আমরা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রাজস্ব জমা দিয়ে বৈধ ভাবে ইজারা নিয়েছি। কিন্তু ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ইজারা প্রদান করতে অন্যায় ভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। তাই একদিকে আমরা ইজারাদাররা যেমন কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়ে পড়েছি। তেমনি সরকারও রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সালাউদ্দিন জানান জাফলং কোয়ারি হতে উত্তোলিত পাথর ও বালু মিশ্রিত পাথর থেকে সরকার নির্ধারিত হারেই রাজস্ব আদায় করা হবে। সরকারের নির্ধারণ করা রাজস্বের হার কমানোর কোন প্রকার সুযোগ নেই। রাজস্ব আদায়ের স্থান নির্বাচন নিয়ে মত বিরোধের বিষয়ে তিনি বলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংকট নিরসনের জন্য সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি কমিটির সদস্যরা কোয়ারি এলাকা ও রাজস্ব আদায়ের স্থান পরিদর্শন করেছেন। অতি শীঘ্রই এই সংকট নিরসন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।