অনিয়ম বরদাশত করা হবে না -সিইসি

32

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিটি নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
গতকাল সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব ইসি বরদাশত করবে না। সবাইকে নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিচ্ছি। এর লঙ্ঘন বরদাশত করা হবে না।
তিনি বলেন, তিন সিটি নির্বাচনে ৪৯ হাজার ৩৩৩ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য, ব্যাপক সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রে ২২ ও ঝুঁকিপূর্ণ ২৪ জন করে ফোর্স দায়িত্ব পালন করবে।
সিইসি বলেন, সব মিলিয়ে ভোটের দিন প্রায় ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ভোটারদের আশস্ত করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য সেনা জোওয়ানরা ক্যান্টনমেন্টে প্রস্তুত অবস্থায় থাকবে। ডাকলেই তারা মুভ করবেন। তাদের সঙ্গে ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন।
তিনি বলেন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ফেল করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা সেনাবাহিনীকে ডাকবে। এছাড়া যদি এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যে, সেনাবাহিনীকে প্রয়োজন তখন তাদের ডাকা হবে।
ঢাকা সিটি নির্বাচনের জন্য ঢাকা ক্যান্টনম্যান্ট, মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট, পোস্তগোলা ক্যান্টনমেন্টে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দুই ব্যাটেলিয়ন সেনা সদস্য অবস্থান নেবে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটির জন্য দামপাড়া ক্যান্টনমেন্ট, হালিশহর ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে এক ব্যাটেলিয়ন সেনা রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অবস্থান নেবে।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে। ভোটার, বিজয়ী ও বিজিত প্রার্থীর নিরাপত্তা প্রদানে নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া নির্বাচনে ৪ হাজার দেশি-বিদেশি সাংবাদিক শতাধিক বিদেশি এবং ব্যাপক সংখ্যক স্থানীয় পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন।
এ সময় ভোটারদের উদেশে তিনি বলেন, আপনারা পছন্দ মতো যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরবেন।
মোবাইলে এসএমএস (ম্যাসেজ) : সিইসি বলেন, ভোটারদের সুবিধার জন্য মোবাইলে এসএমএস ও কলসেন্টার এবং অনলাইনে ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ লাখ ৪৭ হাজার ভোটার এ সেবা গ্রহণ করেছে। এছাড়া কল সেন্টারের মাধ্যমে ৩ হাজার ভোটার এবং ওয়েবসাইট থেকে ৩৫ হাজার ভোটার তাদের ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর জেনে নিয়েছেন।
প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন,  আপনারা একে অপরের প্রতি সহিষ্ণু হোন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল থেকে জনগণের রায় মেনে নিন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ইতোপূর্বে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচন করেছি। প্রার্থীরা সুন্দর পরিবেশে প্রচারণা চালিয়েছেন। এতে এটাই প্রমাণ করে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে। যে কয়টি ভুল হয়েছে, তা ছোটাখাটো। আমরাও চেষ্টা করছি যেন সবার জন্য সমান সুযোগ হয়।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে টহল শুরু হয়েছে। কিন্তু চোরাগুপ্তা হামলা হলে বা হঠাৎ হামলা হলে ধরা যায় না। আমরা এসব বিষয়ে খুবই অ্যাকটিভ। পুলিশকে বলেছি তারা যেন খুব ইমিডিয়েটলি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়।
নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক প্রার্থীর প্রশ্ন তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ছয়-ছয়টি নির্বাচন করেছি। সব নির্বাচন গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকি। কাজেই ইসির স্বাধীনতা আপনারাই বিচার করবেন।
তিনি বলেন, তিনটি নির্বাচনের যে কর্মযজ্ঞ তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনের প্রশিক্ষণ শেষ, কেন্দ্রে কেন্দ্রে মালামাল পৌঁছে গেছে। সংখ্যার দিকে থেকে অন্য যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে ফোর্স বেশি। আশা করি বিজয়ী এবং বিজিত প্রার্থী ফলাফল মেনে নেবেন।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ করবে ইসি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব জেসুমিন টুলী, জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান প্রমুখ।