র‌্যাবের অনেক সাফল্যের খবর সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব পায় না ————————-প্রধানমন্ত্রী

33

3_130133কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও নৃশংসতা করতে দেব না। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাবের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাহিনীর সদর দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গি দমনে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাফল্য জাতিকে আশান্বিত করেছে। দেশের মানুষের মাঝে আস্থা ও স্বস্তি ফিরে এসেছে। র‌্যাব এখন সত্যিকারের একটি এলিট ফোর্স হিসেবে গড়ে উঠেছে। র‌্যাবের হাতে এখন অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি রয়েছে। কিন্তু এটাও সত্য যে, অপরাধী ও জঙ্গিরাও দিন দিন নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এ অবস্থায় র‌্যাবের আরও আধুনিকায়ন প্রয়োজন। তাই র‌্যাব ফোর্সকে আরও আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে যা কিছু প্রয়োজন তার সবকিছুই করা হবে।
এ সময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হকসহ র‌্যাবের পদস্থ সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উগ্র জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে র‌্যাব। জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং অসংখ্য জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এতে এসব সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এ কারণে আমরা জঙ্গি দমনে সফল হয়েছি। জঙ্গি দমনে এ সাফল্য জাতিকে আশান্বিত করেছে। বহির্বিশ্বেও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি একটি ঘৃণ্য অপরাধ। র‌্যাব এ ঘৃণ্য অপরাধীদের গ্রেফতার করে অনেক অপহৃত শিশু ও ব্যক্তিকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী চরমপন্থী এবং বনদস্যু দমনেও সফল ভূমিকা রেখেছে র‌্যাব। র‌্যাবের এ ধরনের সাফল্যের খবর সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পায় না বলেই উদ্ধারের খবরগুলো অনেকের অজানা থেকে যায়। এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক। জানি না, এটা সাংবাদিকতার দুর্বলতা নাকি সত্যিই এ খবরের গুরুত্ব নেই। অর্থাৎ অপরাধটাকে যতটা গুরুত্ব দেয়া হয়, অপরাধী যখন ধরা পড়ে বা সেটাকে যখন শোধন করা হয়, সে খবরের গুরুত্ব একটু কমই পাওয়া যায়। সংবাদপত্রের এ অবস্থান আমাদের দেশের জন্য দুর্ভাগ্যের।
র‌্যাবের বিভিন্ন অভিযানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের অপতৎপরতা, চোরাচালান, জাল মুদ্রা ও পাসপোর্ট প্রস্তুত এবং অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা রোধে র‌্যাব ফলপ্রসূ অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়া ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাও জনমনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। র‌্যাবের প্রতিনিয়ত সফল অভিযানে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে, যা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। তিনি জানান, ভবিষ্যতে উপকূলীয় এলাকায় অপরাধ রোধে র‌্যাবের ব্যাটালিয়নের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি ও সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, র‌্যাবসহ সব বাহিনীই যাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে এজন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগকে ভেঙে দুটি করে মোট চারটি বিভাগ করা হবে। এতে বিশাল এলাকা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে না। প্রতিটি বিভাগেই বাহিনীর নিজস্ব শক্তি থাকবে। আর তাতে তাদের দায়িত্বপালন আরও সহজ হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব, এমন মত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২ কোটি মোবাইল ফোনের সিমকার্ড মানুষের হাতে হাতে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে চার কোটি। এমন উদাহরণ বিশ্বের খুব কম দেশেই রয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়ন চায় না বলেই দেশে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। তিনি বলেন, আমরা বিআরটিসির জন্য নতুন বাস কিনেছি, রেলের জন্য লোকোমোটিভ কিনেছি, আর আন্দোলনের নামে তারা সেগুলো পুড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য শেষে র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কথা শোনেন এবং তা বিবেচনারও আশ্বাস দেন। পরে র‌্যাব-৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১১ এবং ১২ ব্যাটালিয়নের ?কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাহিনীর নিজস্ব ভবন ও প্রশিক্ষণ ভবনসহ মোট ৯টি ভবনের নামফলক উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।