নেচে গেয়ে আনন্দ উৎসবে উদযাপিত হলো মির্জাজাঙ্গাল স্কুলের পুনর্মিলনী উৎসব ॥ এই স্কুলের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে- বদর উদ্দিন কামরান ॥ এই স্কুল থেকে শিক্ষা লাভ করে দেশ-বিদেশে আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত-আফছর উদ্দিন

252

DSC_0315স্টাফ রিপোর্টার :
দীর্ঘদিন পর স্কুলের এক সময়কার সহপাঠিকে কাছে পেয়ে আবেগে-আপ্লুত হলেন, জড়িয়ে ধরলেন। দিনভর চললো স্কুল জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। বলতে বলতে অনেকেই হারিয়ে গেলেন নষ্টালজিয়ায়। নগরীর ঐতিহ্যবাহী মির্জাজাঙ্গাল স্কুলের ৮০ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পুনর্মিলনী উৎসবকে কেন্দ্র করে বসে ছিল প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মিলন মেলা চললো নাচ-গান আর আনন্দ উৎসব। এ উপলক্ষে গতকাল রাত ৮ টায় মির্জাজাঙ্গালস্থ ইর্ভানা ইনের উইন্টার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হয় মূল আলোচনা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার সিলেট সফর বাতিল হওয়ায় তিনি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে পারেন নি। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য যুগ্ম সচিব ও এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র শেখ মোহাম্মদ শামীম ইকবাল, দৈনিক কাজিরবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক শিক্ষানুরাগী আফছর উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহবায়ক সালেহ আহমদ। কবিতা আবৃত্তি করেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরের ডিসি ফয়ছল আহমদ।
অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ও সাংবাদিকসহ স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন উৎসব উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম-সদস্য সচিব চন্দন রায় ও নির্ভানা ইনের এমডি ও উৎসব উদযাপন পরিষদের যুগ্ম-সদস্য সচিব তাহমিন আহমদ।DSCF6356
অনুষ্ঠানের পরে বিশেষ অতিথিরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (প্রাথমিক) প্রয়াত রাজেন্দ্র ভট্টাচার্যের স্ত্রী আরতি ভট্টাচার্যে কাছে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। পরে অতিথিরা একে একে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সহিদ, স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী সালেহা লস্কর ও শেখ শামীম ইকবালের হাতে। অতিথির কাছ থেকে সম্মাননার শুভেচ্ছা স্মারক গ্রহণ করেন উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক সালেহ আহমদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, মির্জাজাঙ্গাল স্কুলটিকে আমরা অনেকেই মন্দির স্কুল হিসেবে চিনি। এটি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ স্কুল থেকে লেখা-পড়া করে আজ অনেকেই সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন পর্যায়ে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন তোমরাও এ স্কুল থেকে সুশিক্ষা গ্রহণ করে একদিন নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত করবে। কামরান বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী এ স্কুলের উন্নয়নে ৪৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। আগামীতেও উয়ন্ননে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আফছর উদ্দিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী ১৩নং ওয়ার্ডের অনেকগুলো সরকারি-বেসরকারি, অফিস-আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এক সময়ে জরাজীর্ণ এ স্কুলটি আজ সিলেটের একটি অন্যতম শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে শুধুমাত্র তার ধারাবাহিক সাফল্যজনক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে। এ স্কুল থেকে শিক্ষা লাভ করে দেশে বিদেশে আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। তিনি বলেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৮০ বছর পূর্তি একটি বিশাল ব্যাপার। তিনি বলেন, এ পুনর্মিলনী উৎসবের  মধ্যে দিয়ে বিদ্যালয়ের সুনাম আরো বৃদ্ধি পাবে। আফছর উদ্দিন বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলের সুনাম ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে তোমাদের সুশিক্ষায় শিক্ষায় শিক্ষিত হবে।
অনুষ্ঠান শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে গান পরিবেশন করেন দেশের প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস ও তার দল, ফকির সাবুদ্দিন ও তার দল এবং স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ।OUYT