কামরানের গাড়ি লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ॥ মহানগর ছাত্রদল সেক্রেটারী লোকমান সহ ৫৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

65

স্টাফ রিপোর্টার :
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের গাড়ি লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জালালাবাদ থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) বেনু দেব বাদি হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামী করে বিস্ফোরক আইনে থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। নং-১ (০৩-০১-১৫)। এর আগে গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পাঠানটুলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালালাবাদ থানা পুলিশ এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে ওইদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ঘটনার সাথে কোন সম্পৃক্ততার না পাওয়ায় আটককৃত ৩ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ২জন হচ্ছেন-নগরীর পাঠানটুলা মোহনা ৩৭/৩ মৃত আজির খানের পুত্র আজমল খান (২৯) ও একই এলাকার মোহনা ২২ নং বাসার আব্দুল জব্বারের পুত্র আব্দুল মুমিন ওরফে মামুন (২৮)। গতকাল শনিবার পুলিশ ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
মামলার অপর পলাতক আসামীরা হচ্ছেন- নগরীর পাঠানটুলা মোহনা ৩৭/৩ মৃত আজির খানের পুত্র আফছর খান (৩২), পীরমহল্লার বাসিন্দা ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মোহাম্মদ লোকমান (৩২), নেহারীপাড়ার বাসিন্দা ও মহানগর ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক স্বপন (৩০), ভাতালিয়ার বাসিন্দা মীর্জা সম্রাট (২৮), বনকলাপাড়া নুরানী ৮৩/৩৩ আজমল আলীর পুত্র ও সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ফাহিম আলম চৌধুরী (৩২),  মিরাবাজারের বাসিন্দা ছাত্রদল নেতা রুমেল শাহ্ (৩০), মজুমদারীর বাসিন্দা চৌধুরী মোঃ সোহেল (৩০), একই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ সরোয়ার হোসেন (৩০), লন্ডনী রোডের বাসিন্দা ওয়াহিদুর রহমান সাজন (৩০), পনিটুলার লাল মিয়ার পুত্র মোঃ মিনহাজ (৩০), নগরীর নুর মোহাম্মদ সড়কের নুর মিয়ার পুত্র মোঃ জুনেদ আহমদ (২৮), একই এলাকার বাসিন্দা তারেক ওরফে চুল লম্বা তারেক (২৭), করেরপাড়ার শ্যাম বাবুর পুত্র ও শাবিপ্রবি’র ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সুদীপ জ্যোতিএষ (২৪), লন্ডনী রোডের অগ্রণী ১৬২ নং বাসার ২য় তলার বাসিন্দা আহমেদ ফাহাদ (২৮), পাঠানটুল জামাল কমপ্লেক্সের বাসিন্দা তানভীর (২৬), লন্ডনী রোড ভাটিপাড়া হাউজের বাসিন্দা আতিক আহমদ (২৬), একই এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হক জিয়া ওরফে ধলা জিয়া (৩০), মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা এইচ রহমান হাবিব (৩২), একই এলাকার বাসিন্দা এনাম (৩০), নগরীর নয়া সড়ক এলাকার বাসিন্দা সল্টি দাস (৩২), বালুচর এলাকার বাসিন্দা ময়নুল ইসলাম রিপন (৩০), নোয়াপাড়া মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা আব্দুল হাফিজ (২২), পাঠানটুলার বাসিন্দা হেলাল খান (২২), রাগীব আলী মেডিকেল কলেজ এলাকার আকবর আলীর পুত্র বাপ্পী (৩২), পাঠানটুলা আফছরের বাড়ির দোকানদার শাবুল ওরফে পিচ্ছি শাবুল (২৬), নগরীর কালিবাড়ির বটপাড়ার মৃত নিখিল দত্তের পুত্র ইমন (২৩), কালিবাড়ির বাসিন্দা দুলাল (২৫), একই এলাকার বাসিন্দা মান্না (২৪), নেহারীপাড়া লেক সিটির বাসিন্দা ফাহিম (৩০), নগরীর লন্ডনী রোড হাজিপাড়ার বাসিন্দা শুভ ওরফে কালা শুভ (২৫), জনি ওরফে পিচ্ছি জনি (২৫) এবং মদিনা মার্কেটের বাসিন্দা কবির হোসেন (২৫)।
৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি আফছর খান জানান, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ লোকমানসহ দলের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বিকেলে মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে সুবিদবাজার লন্ডনী রোড এলাকায় গিয়ে পথসভায় মিলিত হয়। মিছিল থেকে কোন ধরণের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা নিরীহ পথচারী। এদের কেউই ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
জালালাবাদ থানার ওসি আকতার হোসেন জানান, কামরানের গাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ছাত্রদল নেতা আফছর খানের বাসার সামনে থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে আকমল খান ও মুমিন নামের দুইজনের বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার সত্যতা পাওয়া গেছে। অপর ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার বিকেলে পাঠানটুলা এলাকা থেকে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। ওই মিছিল থেকে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার পাঠানটুলা সানরাইজ কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে পাঠানটুলা পয়েন্টে কামরানের গাড়ি লক্ষ্য করে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বোমাটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গাড়ির পাশে রাস্তায় বিস্ফোরিত হয়।