ওসমানীনগরে পরিবহন শ্রমিকদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ওসির মৃত্যু, গুলিবিদ্ধ সহ আহত ২০

27

85792555ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে গোয়ালা বাজারে অটোরিক্সা শ্রমিক সংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ ২০জন আহত হয়েছেন। ২য় দফায় সংর্ঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান। গতকাল  বুধবার দুপুরে ও বিকালে  উপজেলার  গোয়ালাবাজারে অটোরিক্সা শ্রমিকদের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দু-দফায় মহাসড় অবরোধ করে শ্রমিকরা। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ২ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ মাস থেকে ওসমানীনগরে গোয়ালা বাজার এলাকায় নতুন শাখা স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে গোয়ালাবাজার সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিকদের একাংশের নেতারা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে চার মাস আগে অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং ৭০৭) এর জেলা শাখার নেতারা দক্ষিণ গোয়ালাবাজার শ্রমিক ইউনিয়ন নামে নতুন শাখা করে স্ট্যান্ড স্থাপনের উদ্যোগ নেন। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান গোয়ালাবাজার শ্রমিক  ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি জিলু মিয়ার নেতৃত্বে একদল শ্রমিক। এ নিয়ে পূর্বে একাধিক বার উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে জেলা শাখার নেতারা নতুন শাখা খোলা স্থগিত করেন। গতকাল বুধবার নতুন স্ট্যান্ডের দাবিতে বুধবার আবারোও একাংশের শ্রমিকরা সকাল ১১টার দিকে দক্ষিণ গোয়ালাবাজারের সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময়  গোয়ালাবাজার শাখার বর্তমান সভাপতি জিলু মিয়ার নেতৃত্বে একদল শ্রমিক অবরোধে বাধা দিলে উভয় গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াসহ সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। উক্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন শ্রমিক আহত হন।  পরবর্তীতে দুপুর ১ টার দিকে নতুন শাখা স্থাপনকারী অটোরিক্সা শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করলে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশ নিয়ে সেখানে যান। তখন পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকাল ৪টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুজ্ঞান চাকমা, হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে হৃদক্রিয়ার আক্রান্ত হয়ে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান মারা যাওয়ার বিষয়টি  নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রমিক সংগঠনটির নতুন শাখা স্থাপনকে কেন্দ্র করে  দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গিয়ে টিয়ার শেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। সংঘর্ষে প্রায়  ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একাধিক আহতরা গুলিবিদ্ধ রয়েছেন। পুলিশী গ্রেফতারের ভয়ে আহতরা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।s--17-`12-14--4