গোয়াইনঘাটে খাবার পানির তীব্র সংকট, ভরসা নদী ও পুকুরের পানি

66

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে খাবার পানির তীব্র সংকট রয়েছে দির্ঘদিন থেকেই। উপজেলা প্রশাসন, থানা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সর্বত্র খাবার পানির হাহাকার। তবে এ সমস্যা নতুন নয় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলছে এ সংকট। কিন্তু খাবার পানির এ সমস্যা সমাধান না করায় এখন তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে রাধানগর বাজার থেকে গাড়ি দিয়ে টাকা খরচ করে খাবার পানি আনতে হয় এলাকাবাসী সহ এখানে চাকরীরত কর্মকর্তাদের। আর যাদের টাকা খরচের ক্ষমতা নেই তাদের পান করতে হয় স্থানীয় নদী ও পুকুরের দূষিত পানি। গত কয়েকদিন উপজেলার হাসপাতাল, থানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল রেস্তোরাঁয় সরজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগির সাথে কথা বলে জানা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে কোনো গভীর নলকূপ নেই। অ গভীর নলকূপ গুলোতে প্রচুর আয়রণ ও আর্সেনিকের প্রভাব। ফলে হাসপাতালে অবস্থানরত রোগীদের বাড়ি থেকে খাবার পানি নিয়ে আসতে হয়। উপজেলা প্রশাসন, থানা, ও বিভিন্ন সরকারি বে সরকারি অফিসের খাবার পানি আনতে হয় উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূর থেকে। বাহির থেকে আসা লোকজনদের কিনে খেতে হয় খাবার পানি। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ব্যবহার করা হয় নদীর পানি। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নলকূপটি প্রায় ১০ বছর ধরে অকেজো। হাসপাতালের ভেতরের একটি পুকুর থেকে পাম্প করে তোলা পানি দিয়ে চলে হাসপাতালের যাবতীয় পানির ব্যবহার। রোগীর জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বাজার থেকে পানি কিনতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, পুকুরের ময়লা পানি দিয়েই টয়লেটের কাজ সারতে হয়। হাত মুখ ধোঁয়ার জন্য নদীর পানি লোক দিয়ে কিনে আনতে হয়। খাবার পানির অপেক্ষায় থাকতে হয় ৬ কিলোমিটার দূর থেকে কখন পানি আসবে। এক রোগীর স্বজন জানান চার দিনে কম করে ৪০০ টাকার পানি কিনতে হয়েছে। হাসপাতালে কর্তব্য রত এক ডাক্তার জানান, পানির জন্য রোগীরা জেমন কষ্ট করছে তেমনি ডাক্তার, নার্স, হাসপাতালের অন্যান্য স্টাফ জারা কোয়ার্টারে থাকেন তাদের পানির জন্য দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। আবার বিশুদ্ধ পানির অভাবে রোগীরা ওরস্যালাইন খায় পুকুরের পানি দিয়ে। এই উপজেলায় রোগের বেশির ভাই পানি প্রবাহিত রোগ। এখানে গেল বছর  জন স্বাস্থ্য অফিসের সহায়তায় একটি নলকূপ বসানো হয়েছিল ঠিকই কিন্তু অধিক আয়রণের জন্য সেটিও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের পানির সমস্যা দূর করতে হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় বিশেষ পালর বসাতে হবে।
এদিকে গোয়াইনঘাট থানায়ও একই ভাবে যাবতীয় পানির ব্যবহার চলে নদী ও স্থানীয় পুকুরের পানি দিয়ে। খাবার পানি আনা হয় সেই রাধানগর বাজার থেকে থানা সূত্র জানায় খাবার পানির জন্য প্রায়ই হাহাকার পরে যায়। প্রতি মাসের বেতনের একটা অংশ চলেযায় খাবারের পানি কিনতেই। একজন পুলিশ সদস্য কত টাকাইবা বেতন পান অথচ তাদেরকেও খাবার পানির জন্য আলাদা টাকা রাখতে হয়।
গোয়াইনঘাট সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর ও একই অবস্থায় দিন পার হচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটের কথা জানান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গোয়াইনঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন গোয়াইনঘাটে খাবার পানির সমস্যা বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। এদিকে নজর দেয়ার জেন কেউই নেই। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অপরদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের হোটেল গুলোতে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পান করা সহ সকল ক্ষেত্রেই  নদীর পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে হোটেল মালিকদের বক্তব্য ও পরিষ্কার, তাদের কথা হলো, গভীর নলকূপ নেই তাই নদীর পানি ব্যবহার করা ছারা আমাদের কিছুই করার নেই। পানির সমস্যাটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খাবার পানির এই সমস্য সমাধানে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কতৃ পক্ষের সু-নজর কামনা করেন গোয়ইনঘাট উপজেলা সদরে অবস্থিত উপজেলা প্রশাসন, থানা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরীরত কর্মকর্তা বৃন্দ ও উপজেলা সদরে বিভিন্ন সেবা নিতে আসা সর্বস্তরের জন সাধারণ।