সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির

22

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভাকাঙ্খীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভোটের মাধ্যমে কানাইঘাট পৌর ও উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের  সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। ২০০৯ সালের ১০ নভেম্বর সর্বশেষ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছিল। কিন্তু সে সময় উপজেলা বিএনপির দু’গ্র“পের মধ্যে কমিটি ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হলে তৎকালীন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলী কোন কমিটি ঘোষণা ছাড়াই সম্মেলনস্থল ত্যাগ করে চলে যান। এরপর থেকে স্বঘোষিত ভাবে উপজেলা বিএনপির দুটি কমিটির মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চলছিল। সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসাবে উপজেলা বিএনপিকে ঢেলে সাজানো এবং দলীয় নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে তাদের পছন্দনীয় নেতা নির্বাচিত করার লক্ষ্যে গত ১৫ মে সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক এড. নূরুল হক সাবেক সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাহির চৌধুরীকে আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা বিএনপির কমিটিকে অনুমোদন দেন। নির্ধারিত ৩ মাসের মধ্যে সকল ইউনিয়নের সম্মেলন করে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন করার জন্য আহবায়ক কমিটিকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকবার সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে আগামীকাল বুধবার উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলা বিএনপিতে গ্র“পিং প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে যতটুকু তৎপরতা হওয়ার কথা তার চাইতে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা øায়ুযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছেন। এতে করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সত্যিকার অর্থে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে কিনা এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, সম্মেলনের মাধ্যমেই কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে বিএনপির নেতৃত্ব যোগ্য নেতাদের হাতে দিতে হবে। এর ব্যতয় ঘটলে দলকে চরম মাসুল দিতে হবে। সম্মেলনে সভাপতি পদে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক চাকসুর সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফরিদ আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মোঃ নাজিম উদ্দিন একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপর প্যানেল থেকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রবীণ বিএনপি নেতা এম এ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হাবিব আহমদ, সাবেক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী জসিম উদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৯টি ইউনিয়নের বিএনপির ২৭ জন কাউন্সিলরের গোপন ভোটে উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হবেন বিধায় সম্মেলনে পদপ্রত্যাশীরা প্রতিদিন ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। সহানুভূতি আদায়ের জন্য দলকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের মতামত তুলে ধরছেন। বিগত সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী বিভিন্ন মামলার আসামী হয়েছেন। অনেকে জেলও খেটেছেন। দুর্দিনে লের নেতাকর্মীদের পাশে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তাদেরকেই নেতা নির্বাচিত করতে চান কাউন্সিলররা। অনেকের সাথে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এদিকে সম্মেলনকে সফল করার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। গতকাল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাহির চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী ও চাকসুর সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক সভাপতি প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন সাংবাদিকদের নিয়ে পৃথক মতবিনিময় করেছেন।