কাজির বাজার ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় ফিঞ্জাল শনিবার বঙ্গোপসাগর থেকে ভারতের দক্ষিণ উপক‚ল অতিক্রম করার পর ভারতে ও শ্রীলঙ্কায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঝড় ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য ও পুদুচেরি অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছে, পুদুচেরিতে ২৪ ঘণ্টায় গত ৩০ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের ফলে চেন্নাই শহরের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়।
শনিবার চেন্নাই থেকে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও রবিবার সকাল থেকে তা পুনরায় শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে প্রতি ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে বাতাসের সঙ্গে স্থলভাগে আঘাত করে ফিঞ্জাল।
তামিলনাড়ু রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী কে কে এস এস আর রামচন্দ্রন শনিবার গভীর রাতে সাংবাদিকদের বলেছেন, চেন্নাইতে ঝড়ের ফলে তিনজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি ‘ন্যূনতম’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রবল বাতাস ও ভারি বৃষ্টির ফলে রাস্তা প্লাবিত হয়েছে এবং নৌকার সাহায্যে লোকজনকে উদ্ধার করা হচ্ছে। পুদুচেরিতে ঝড়ের কেন্দ্রস্থলের লোকজনের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চেন্নাইয়ে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কিছুটা কমে এসেছে।
অন্যদিকে এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ঘূর্ণিঝড় ফিঞ্জাল শ্রীলঙ্কার উপক‚ল অতিক্রম করে।
এই ঘূর্ণিঝড়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছে এবং ভারি বৃষ্টিতে মোট এক লাখ ৩৮ হাজার ৯৪৪টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কলম্বোর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা গেছে।
উত্তর আটলান্টিক বা উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে হারিকেন বা টাইফুন নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড়গুলো উত্তর ভারত মহাসাগরে একটি নিয়মিত ও প্রাণঘাতী বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড় আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। উষ্ণ সমুদ্রের পৃষ্ঠ থেকে আরো বেশি পরিমাণে জলীয় বাষ্প নির্গত হয়, যা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য অতিরিক্ত শক্তি জোগায় এবং বাতাসকে আরো প্রবল করে তোলে। এ ছাড়া উষ্ণ বায়ুমÐল আরো বেশি পানি ধারণ করতে পারে, যা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে।
তবে উন্নত আবহাওয়া পূর্বাভাস ও কার্যকরভাবে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হয়েছে।