মৌলভীবাজারের বুড়িকিয়ারির বাঁধ অপসারণের দাবি

2

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

ফেঞ্চুগঞ্জের কাছে বুড়িকিয়ারি গাঙে বাঁধ নির্মাণের ফলে হাকালুকি হাওরে থেকে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে হাওরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত জুড়ী নদীর পানি ভবানীপুর পয়েন্টে প্রায়ই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
চলমান পরিস্থিতিতে জেলার বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া উপজেলার দেড়শতাধিক গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ দীর্ঘামেয়াদি বন্যার সঙ্গে যুদ্ধ করছে। দফায় দফায় বন্যায় বিপর্যস্ত তাদের জীবন। এমন অবস্থায় কাউয়াদীঘি হাওর রক্ষা আন্দোলন কমিটি হাকালুকি হাওরপারের বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী বুড়িকিয়ারি বাঁধ অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি এক বিবৃতি সূত্রে জানা যায়, জেলা হাওর-বাঁওড়, খাল, নদী-নালাবেষ্টিত হওয়ায় আগেকার দিনে এ জেলার মানুষ বর্ষা মৌসুমেও দীর্ঘমেয়াদি বন্যায়ও ক্ষতির মুখে পড়তেন না। তবে কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে হাকালুকি হাওরের সংযোগস্থল বুড়িকিয়ারি গাঙে বাঁধ নির্মাণের ফলে দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়তে হচ্ছে।
নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার গিলাছড়া ইউনিয়ন এলাকায় বুড়িকিয়ারি গাঙ্গের মুখে বাঁধ নির্মাণ করে হাওরের পানির সরাসরি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই থেকে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার মানুষ প্রতি বছরই কমবেশি বন্যার শিকার হচ্ছে। এ এলাকার গ্রামাঞ্চলের গরিব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পানির নিচে থাকায় বন্যাকবলিত লোকজন চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দি থাকায় এবং আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘিœত হচ্ছে।
কাউয়াদীঘি হাওর আন্দোলনের সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজারের সমন্বয়ক আসম সালেহ সুহেল জানান, পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম হাওর হাকালুকির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র প্রবাহস্থল কুশিয়ারা নদী। বুড়িকিয়ারি গাঙে বাঁধের কারণে পানির প্রবাহে স্বাভাবিক গতি না থাকায় বর্ষা মৌসুমজুড়ে হাওরপারের মানুষকে জলাবদ্ধতায় ভুগতে হয়। তাই বুড়িকিয়ারি বাঁধ অপসারণের বিকল্প নেই।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, চলতি বছরের জুন মাসে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সভায় জেলা প্রশাসক বুড়িকিয়ারি বাঁধ অপসারণের বিষয়টি উত্থাপন করেন। এরপর সভায় সিদ্ধান্ত হয় দুই জেলার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যৌথভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এ বাঁধটি ক্ষতির কারণ হলে সেটি অপসারণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।