টানা চার মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা

25

 

কাজির বাজার ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে গতকাল। নির্বাচনের ফলাফল কী হবে, তা সহজে আঁচ করতে পারছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে। বিবিসি, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, আল-জাজিরাসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচন। এসব প্রতিবেদনে উঠে আসছে, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। তবে প্রধানবিরোধী দল বিএনপি ও তাদের সমমনা কয়েকটি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচন প্রতিহতেরও ঘোষণা দিয়েছে তারা। নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছে এসব দল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনের ফল কী হবে, তা আগেই বোঝা যাচ্ছে। টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পথে আওয়ামী লীগ। এমনকি পরাজিত হতে চলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দমনমূলক পররাষ্ট্রনীতি।
‘রবিবার বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন’ এই শিরোনামে বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নৌকা প্রতীকের প্রচার-প্রচারণার কয়েকটি ছবি দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) জরুরি ঋণ সহায়তার প্রয়োজন পড়েছিল বাংলাদেশের। তা সত্তে¡ও টানা চার মেয়াদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলোয় নিয়মিত খবরের পাশাপাশি মতামতভিত্তিক লেখা প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এমনই এক লেখার শিরোনাম ‘বাংলাদেশের নির্বাচনে দড়ি টানাটানির খেলা : ইসলামী মৌলবাদ বনাম গণতন্ত্র’। আর আজ এনডিটিভিতে প্রকাশিত একটি লেখার শিরোনাম ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধ’। আরেক মার্কিন গণমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে তরুণ ভোটাররা রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলামুক্ত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন।
এর আগে গত বছরের মার্চে বিশ্ব বিখ্যাত সংবাদ সংস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বøæমবার্গ এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও বিগত ১৪ বছর বাংলাদেশকে বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের তালিকার মধ্যে ধরে রাখতে পারার ফলেই শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে জয়ী হবে।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে পঁচাত্তরের পর টানা চতুর্থ ও মোট পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠন করবে আওয়ামী লীগ। আর দলটির সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে প্রথমবার বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটে। সেই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের নেতার আসনে বসেন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাও দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় নির্বাচন। সেই নির্বাচনেও টানা দ্বিতীয় ও মোট তিন মেয়াদে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ। সেই সরকারেও প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় ও মোট পঞ্চমারের মতো সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা সেই সরকারেও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও টানা চতুর্থ মেয়াদে ও মোট পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগের বিজয়ী হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরেও তা বলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এ নিয়ে মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি।