শান্তিপূর্ণভাবে সিলেটে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন

6

সিলেটে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শীতের সকালে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সংখ্যা। বিশেষ করে দুপুরের দিকে বেশ কিছু কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্যণীয়।
বিভিন্ন কেন্দ্রে সরেজমিনে নারী ভোটারের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। সিলেট সিটি এলাকার দুর্গাকুমার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া পাঠানটুলা কামিল মাদ্রাসা, সিলেট সরকারী আলীয়া মাদরাসা কেন্দ্রগুলো ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। অনেক কেন্দ্রে সকাল থেকেই ভোটাররা তাদের ভোট দিতে লাইনে দাঁড়ান।
এবারের নির্বাচনে সিলেটের ৬ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন ৩৩ প্রার্থী। ছয়টি আসনে মোট ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে গতকাল ভোট পড়েছে ৩০%’র মতো।
এদিকে, রবিবার ভোট চলা অবস্থায় দুপুরে সিলেট-২ আসনে (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) একসঙ্গে ভোট বর্জন করেন ৪ প্রার্থী। তারা হলেন- গণফোরামের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য), বিশ্বনাথ পৌরমেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান (ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া (লাঙ্গল) এবং তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুর রব (সোনালী আঁশ)। দুপুর দেড় টায় ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারস্থ একটি রেস্টুরেন্টে প্রেস ব্রিফিং করে এ ৪ জন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের অভিযোগ- সিলেট-২ আসনজুড়ে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের এজেন্টদের মারধরসহ হুমকি-ধমকি প্রদান করেছে। যার ফলে তারা ভোট বর্জন করেন।
একই সময়ে সিলেট-৪ আসনের তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মোঃ আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ) ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে এ ঘোষণা দেন তিনি।
একেবারে শেষ সময়ে (বৃহস্পতিবার বিকালে) এসে সিলেট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলালও (ট্রাক প্রতীক) ভোট বর্জন করেন। তাঁর অভিযোগ- বালাগঞ্জের প্রায় প্রতিটি কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয় এবং মারধর করা হয়। এছাড়া নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জাল ভোট প্রদানের অভিযোগ করেন দুলাল।
অপরদিকে, সিলেট-৩ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক ফেঞ্জুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলার ৩৬টি কেন্দ্রের ভোট প্রত্যাখ্যান করেন। নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে জাল ভোট ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে রবিবার বিকেল পৌনে ৪টায় তিনি এসব কেন্দ্রের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। এসময় তিনি এসব কেন্দ্রে ফের নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।
অন্যদিকে, সিলেট-১ আসনের অন্তর্ভুক্ত মহানগরের পাঠানটুলা এলাকার একটি ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার পাঠানটুলা দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বলে জানান সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবার আলী শেখ। তিনি জানান, প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন দুর্বৃত্তরা একটি গলির ভেতর থেকে বেরিয়ে পাঠানটুলা দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। সিলেটে ভোটগ্রহণ নির্বিঘœ ও সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী মাঠে ছিলো দিনভর। এছাড়া মাঠে ছিলো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনস্থ স্ট্রাইকিং টিমও।