আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সিলেটের সব সীমান্ত দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ

7

 

জৈন্তাপুর সংবাদদাতা

কাস্টমস ডিউটি ও আমদানি শুল্ক বাড়ানোর প্রতিবাদে সিলেট বিভাগের সব স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার থেকে তারা আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
সিলেটের বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে দিয়ে মূলত বড় পাথর (বোল্ডার) ও চুনাপাথর আমদানি হয়। কয়েকটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি হয়। ফলে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়ায় অচল হয়ে পড়েছে স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তামাবিল স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, বন্দরে নেই নিত্যদিনকার ব্যস্ততা। ভারত থেকে কোন পন্যবাহী ট্রাকই বাংলাদেশে আসছে না। ফলে স্থবির হয়ে আছে সিলেটের প্রধান এই স্থলবন্দর।
তামাবিল চুনা পাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রæপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির উপর এ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে দুই ডলার বৃদ্ধি করে। এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সিলেটের সবকটি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।
শুল্ক বাড়ানো নিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে আমদানিকারকদের বাদানুবাদ চলছে। ব্যবসায়ীরা বাড়তি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানালেও কাস্টমরস কর্মকর্তারা তাতে রাজি হননি। আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় আমদানি বন্ধ তরে দেন তারা। সুনামগঞ্জের ছাতক লাইমস্টোন ইম্পোর্টার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম চৌধুরী বলেন, এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ। তার ওপর টন প্রতি ২ ডলার করে ডিউটি বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে চুনাপাথরের ডিউটি (ইম্পোর্ট অ্যাসেসম্যান্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার এবং বড় পাথরের (বোল্ডার) রেট ১১ ডলার বাড়িয়ে ১৩ ডলার করার কথা জানানো হয়েছে। এ কারণে ট্রাক প্রতি ব্যয় ১২ থেকে ১৩শ’ টাকা বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমরা বুধবার থেকে সিলেট বিভাগের সব শুল্ক স্টেশন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বোল্ডার ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমদানি বন্ধ থাকবে। তবে ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
কাস্টমসের সিলেট অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার সোলাইমান হোসেন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়নি। শুল্কও আমরা বাড়াইনি। এনবিআর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগের ৮৪ টাকার পরিবর্তে এখন ডলারের মূল্য ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকেই মূলত অ্যাসেসম্যান্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে। তবে, আমদানিকরা চাইলে এ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
সিলেট বিভাগে তামাবিল স্থলবন্দর ছাড়া আরো ১২টি শুল্ক স্টেশন রয়েছে। সেগুলো হলো কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাঁও এবং ছাতকের ইছামতি ও চেলা স্টেশন। এগুলো দিয়ে মূলত চুনাপাথর ও বোল্ডার আমদানি হয়।