রাস্তার বেহাল দশায় জামালগঞ্জ, মধ্যনগর ও ধর্মপাশার বাসিন্দাদের ঈদযাত্রায় অনিশ্চয়তা

5

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে জামালগঞ্জ, মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলাকে সংযুক্ত করা কাঠইর-জামালগঞ্জ সড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগে পড়েছেন তিন উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষ। গত তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এ সড়কের উজ্জ্বলপুর অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঈদের আগে সড়কটি মেরামত না করলে তিন উপজেলাবাসীর ঈদযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, এ সড়কের উজ্জ্বলপুর অংশসহ কিছু অংশের আগে দু’বার ভেঙেছে। এ বছরও এখানে ১৪ লক্ষ টাকার জরুরি মেরামত কাজ করা হয়েছে। এরপরও গত তিনদিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কের উজ্জ্বলপুর অংশে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়কটি প্রায় ডুবুডুবু অবস্থা। যে কোনো সময় পাহাড়ি ঢলে সড়কটি ভেঙে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে।
এতে জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তিন উপজেলার।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ-মান্নানঘাট সড়কের দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় এ সড়কের সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর থেকে শাখাইতি ও হুসেন নগর অংশ খানাখন্দে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের জাল্লাবাজ ও উজ্জ্বলপুর গ্রামের কাছে কয়েকশ ফুট পাকা সড়ক ভেঙে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া জামালগঞ্জ উপজেলা সদরের প্রবেশদ্বার শাহপুর বাঁধ ভেঙে সড়কে তৈরি হয়েছিল খাল। জরুরিভাবে মেরামত করে এ সড়ক দিয়ে লেগুনা, সিএনজি, ছোট পিকআপ চলাচলের ব্যবস্থা করে দিলেও গত তিনদিনের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কটির উজ্জ্বলপুর অংশে আবারো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
হাওর অধ্যুষিত ভাটির জনপদ ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলার বাসিন্দারা জেলা সদরে আসেন মান্নানঘাট-জামালগঞ্জ-কাঠইর সড়ক দিয়ে। এ পথে সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হলে ছয় লাখেরও বেশি মানুষ সুনামগঞ্জ জেলা সদরে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়বেন। উজ্জ্বলপুর গ্রামের মাহমুদ হোসেন বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে উজ্জ্বলপুরের ভাঙা জায়গাটিতে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের আগে সড়কটি মেরামত না করলে তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের ঈদযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হবে।
ধর্মপাশা উপজেলার বাসিন্দা চয়ন কান্তি কর বলেন, এ সড়ক দিয়ে তিন উপজেলার লোকজন যাতায়াত করেন। তাই ঈদের আগেই জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামমত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল আহমেদ বলেন, ভাটির জনপদ ও হাওড় অধ্যুষিত জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর তিন উপজেলাবাসীর জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। ভারি বৃষ্টিপাতে সড়কটির উজ্জ্বলপুর অংশটি প্রায় ডুবে যাচ্ছে বললেই চলে। যে কোনো সময় সড়কটি ডুবে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। আর এতে ঈদযাত্রায় তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, ইতোমধ্যে একবার এ সড়কে জরুরি মেরামত করা হয়েছে। ঈদযাত্রায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে যেনো কোনো ধরনের ভোগান্তি পোহাতে না হয় সে জন্য সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।