সিলেট থেকে রাজনৈতিক দল সিলটি পাঞ্চায়িত’র যাত্রা শুরু

47

স্টাফ রিপোর্টার :
‘সিলটি পাঞ্চায়িত’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট নগরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমদ চৌধুরী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক গণভোটের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের মানুষ ভারত ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশে যোগদানের পক্ষে ভোট দেয়। ফলে আমরা আজকের বাংলাদেশে আছি। সিলেটবাসী মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রেখেছেন। তারা প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ফান্ড তৈরি করেন। দেশের সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এই সিলেটের মানুষ প্রেরণ করেন। তবুও সিলেট আজ অবহেলিত। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য বিভাগের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও এই সিলেট বিভাগে ব্যয় করা হয় নাই। সুষম উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত সিলেট অঞ্চল।
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘সিলেট একমাত্র একটি বিভাগ যার নিজস্ব ভাষা ও পৃথক লিপি রয়েছে। যা অন্যান্য বিভাগে নেই। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সিলেটবাসীর মুখের ‘সিলেটি নাগরি ভাষা’ আজ অবহেলিত। এ নাগরি অক্ষর চর্চা হয় না। তাই আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি সিলেট বিভাগের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাগরি ভাষার অক্ষর শিক্ষা দেওয়া হোক।’
পিতা-মাতা বাংলাদেশি নাগরিক হলে সন্তানদের দেশে আসতে যেন ভিসা প্রয়োজন না হয়Ñ সাতপুরুষ পর্যন্ত এই নীতি বহাল রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার নতুন আইন করছেন যে পিতা মাতার বাংলাদেশী পাসপোর্ট না থাকলে তাদের সন্তানেরা বাংলাদেশি ভিসা বা পোর্ট ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশে আসতে হবে। যে ভিসার মেয়াদ হবে চার সপ্তাহ। আমরা দাবি জানাই, পিতামাতা বাংলাদেশি নাগরিক থাকলে সন্তানের বাংলাদেশে আসতে ভিসার যেন প্রয়োজন না হয়। বাংলাদেশির বিদেশি পাসপোর্ট থাকলে (সাত পুরুষ পর্যন্ত) সেটা যেন পরিচয়পত্র হিসেবে বাংলাদেশে পাসপোর্টের সমান মর্যাদা পায়।’
নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘পাসপোর্ট থাকিলেও কোনো অবস্থায় যেন বিদেশি বাংলাদেশি নাগরিকত্বের ক্ষতি না হয়। সরকার একদিকে ডলার সংকটে ভুগছে অন্যদিকে প্রবাসীদের সন্তানদের ব্যাপারে কড়াকড়ি করে দেশে আসতে নিরুৎসাহিত করছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে দেশকে বঞ্চিত করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- ‘সিলেট বিভাগে যে সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোতে শতভাগ সিলেট বিভাগের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ দেওয়া হোক। ঘরে ঘরে সিলেট বিভাগের স্থায়ী বাসিন্দারা তাদের উপযুক্ত ছেলে-মেয়েদের বিয়ে সাদী দিতে পারছেন না। কারণ তাদের চাকরি নাই। এতে সিলেট বিভাগে সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট বিভাগের বাসিন্দাদের গ্যাস প্রদানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত গ্যাস অন্যত্র দিতে আপত্তি নেই। তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে সিলেট বিভাগের বাসিন্দাদের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করতে হবে। সিলেটে বিভাগে যেসব খাস জমি রয়েছে তা বিভাগের ভূমিহীন স্থায়ী বাসিন্দাদের দিতে হবে।’
বন্যা থেকে সিলেট বিভাগকে রক্ষায় নদী খননসহ সব মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত করার দাবি জানান তিনি। একইসঙ্গে হাইকোর্টের বেঞ্চ পুনর্বহাল, ‘হাওর উন্নয়ন বোর্ড’ স্থাপন এবং সব দাবি বাস্তবায়নে সিলেট বিভাগকে স্বায়ত্বশাসনের দাবি জানান।