বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেটের গণঅনশন ॥ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনসহ ৭ দফা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনতিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে

8

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধ সহ সরকারী দলের ৭ দফা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (২২ অক্টোবর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল-সন্ধ্যা গন অনশন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য সভাপতিত্বে, মহানগর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেব ও এডভোকেট রঞ্জন ঘোষের যৌথ সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলার সাধারণ সম্পাদক কৃপেশ চন্দ্র পাল।
গণঅনশনে বক্তারা বলেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনসহ ৭ দফা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনতিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংশিষ্টদের বিষয়ে বর্তমানে ক্ষমতাশীন দল যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা দীর্ঘদিন বাস্তবায়িত না হওয়ায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ধারাবাহিক আন্দোলনের করে যাবে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল মহান স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে আগেও দেশের সংখ্যালঘুদের কাছে অলীক। সকল ক্ষেত্রে সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠান জন্য ক্ষমতাশীন দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর সম্পতি সংরক্ষণ আইন প্রনয়ন, অর্পিত সম্পতি প্রত্যাবর্তন আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন বাস্তবায়ন, সমতলের অধিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন সহ অন্যান্য দাবি দাওয়া জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।
বক্তরা আরো বলেন, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হলেও সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মন্ধতা, মৌলবাদিতা, সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনীতির রন্ধেরন্ধে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক সামাজিক পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মন্ধতার ব্যাপক উত্তানের দেশের ধর্মীয়, জাতীয়তা ও সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগোষ্টি অস্থিত্বের সংকট ভোগছে। ক্রমাগত সাম্প্রদায়িক হামলা, নির্যাতন, ভয়ভীতি, হুমকি, জমি জবর দখল ্এমনকি হত্যা ধর্ষণ তাদেরকে দিশেহারা ও নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে। এতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে দেশ ত্যাগের প্রয়নতা দেখা দিয়েছে। অনেকেই ইতিমধ্যে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। বক্তরা বলেন, দেশের সংখ্যালঘুদের দাবিগুলো অত্যন্ত যুক্তিক ও সাংবিধানিক। তাই অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘুদের ন্যায় সংগত দাবি মেনে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করুন। বক্তরা বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক নিবিড়ন নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান। তারা বলেন রাষ্ট্রের সংহতির জন্য শিক্ষার সাম্প্রদায়িকরণের অতৎপরতা রোধ করতে হবে। এবং ইসলামী ফাউন্ডেশনের অনুরুপে বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফাইন্ডেশন ও বাংলাদেশ খ্রিষ্টান ফাউন্ডেশন গঠন করতে হবে এবং শারদীয় দূর্গা পুজার ৪ দিনের সরকারী ছুটি নিশ্চত করতে হবে।
গণঅনশনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা বারের সাবেক সভাপতি সাবেক পিপি এডভোকেট এমাদুল্লাহ শহীদুল্লাহ শাহীন, সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি সিকন্দর আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএমএ হাসান জেবুল ও মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সিলেট জেলার শাখার নেতৃবৃন্দ।
গণঅনশনে বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিক্রম কর স¤্রাট, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, সিলেট মহানগরের সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, সহ-সভাপতি এডভোকেট প্রশান্ত কুমার পাল, পূজা পরিষদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ডা: হিমাদ্রী শেখর রায়, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রজত কান্তি ভট্রাচার্য, জেলার সভাপতি ও ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ চয়ন, সুব্রত দেব, এডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ^াষ, ট্রাইবেল ওয়েলফেয়ার এসোসিশনের সভাপতি দানেশ সংমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়, বৌদ্ধ সম্পদায়ের নেতা অধ্যাপক বরুণ চৌধুরী, রেভারেন্ড ফিলিপস সমাদ্দার, প্রণব দেবনাথ, বিনতা দেবী, প্রদীপ দে মালা, মানিক লাল দে, পূজা উদযাপন পরিষদের সাদারণ সম্পাদক রজত কান্তি গোপ্ত, ধীরেন্দ ধর, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিধান চন্দ্র দাশ, মনমোহন দেবনাথ, নন্দন পাল, অরুন কুমার বিশ^াস, রঞ্জিত দত্ত, বাবুল দেব, রাজ কুমার পাল রাজৃু, জিডি রুনু, স্বপন দাস, আশিষ দে, নির্মন সিনহা, এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন, লিটন দেব, ডা: রঞ্জিত রায়, জ্যোতিষ দত্ত, ধীরেষ দেবনাথ, শ্যামল দে, এডভোকেট অরবিন্দ দাস গুপ্ত, শ্যামল চৌধুরী, শৈলেন কর, ধনঞ্জয় দাস ধনু, রবীন্দ্র দাস ভক্ত, প্রভাষক অপূর্ব কুমার পাল, মিথিল পাল প্রান্ত, শুভ্র জ্যোতি সরকার, শাওন দাস, রকি দেব প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দকে সন্ধ্যায় গণঅনশনে জল পান করিয়ে ভাঙ্গান সিলেটের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আধ্যাপক বিজিত কুমার দে ও বিরাজ মাধব চক্রবর্তী মানুষ। বিজ্ঞপ্তি