ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই – প্রধানমন্ত্রী

9
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তাঁর সদ্য সমাপ্ত রাষ্ট্রীয় সফর সম্পর্কে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত কে আসবে কে আসবে না। সেখানে আমরা তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না। রাজনীতি করতে হলে দলগুলো নিজে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই সব দল অংশগ্রহণ করুক। তবে একেবারে সবাইকে লোকমা তুলে খাইয়ে দিতে হবে, জিতিয়ে দিতে হবে তবেই নির্বাচনে আসব- এটা তো আর হয় না। বিএনপির খুঁটির বা শিকড়ের জোর থাকলে জনগণের কাছে না গিয়ে বিদেশীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ধর্ণা দিত না।
বিএনপি জনগণের সামনে ভোট চাইতে ভয় পায় দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সামনে ভোট চাইতে বিএনপি ভয় পায়, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। অগ্নিসন্ত্রাস করে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের কি মানুষ ভোট দেবে? কখনও দিতে পারে না। কারণ, সেই পোড়া ঘা তো এখনও সবার শুকায়নি। এখনও মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। গ্রেনেড হামলায় যারা আহত। যারা লুটপাট করে খেয়েছে। সেই কথাগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। তবে আমরা তো চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। অন্তত আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে তো ক্ষমতায় আসে না, আসেও নাই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ভোটের মাধ্যমেই এসেছে। নির্বাচনের মাধ্যমেই এসেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে তার সদ্যসমাপ্ত রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামী বছর বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছেন বিশ্বের সবাই। এ নিয়ে সবাই আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশবাসীকে নিজ নিজ জমিতে চাষাবাদ করার জন্য আবারও অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী একটা আশঙ্কা, আগামী বছর একটা মহাসঙ্কটের বছর হবে। সে জন্য আগে থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নেয়া দরকার। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টা বেশি বিবেচনা করার দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের জনসমর্থন রয়েছে বলেই সব সঙ্কট মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছি। বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে থাকায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতি মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী দিক বিবেচনা করে কোন ঝুঁকির মধ্যে নেই। আমি আপনাদের সকলকে নিশ্চিত করতে পারে যে, উদ্বেগের কিছু নেই। বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থাতেও আমাদের দেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। প্রধানমন্ত্রী দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও যেন অনাবাদী না থাকে সে জন্য দেশবাসীকে পুনর্বার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমরা কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছি, আরও বরাদ্দ আলাদা করে রেখেছি। আমরা চাই না দেশের জনগণের কোন কষ্ট হোক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেয়ায় দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আতে পারেনি সত্য। কিন্তু তা করলে আজকে কিছুটা লোডশেডিং দিয়েও বিদ্যুৎ সঞ্চালনা যেভাবে অব্যাহত রাখতে পারছেন তা সম্ভব হতো না, দেশ অন্ধকারেই নিমজ্জিত হতো। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির যে টার্গেট আমরা নির্দিষ্ট করেছি, তা আমরা অর্জন করতে সমর্থ হব সে বিষয়টি আমি সবাইকেই আশ^স্ত করতে চাই। এরপর যদি কোন মহাদুর্যোগ দেখা দেয় তা হলে তো সারা বিশে^রই সমস্যা হবে, তা নিয়েতো বেশি কিছু বলার নেই। তবে, আমাদের অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী আছে এটুকু আশ^াস আমি দিতে পারি।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডনে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় এবং রাজা তৃতীয় চার্লস আয়োজিত সিংহাসনে আরোহণ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এরপর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ১৯ সেপ্টেম্বর লন্ডন ত্যাগ করেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা গত ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং এর ফাঁকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। গত সোমবার দিবাগত রাত ১টায় দেশে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এই দীর্ঘ সফরে অর্জিত সাফল্যেগুলো সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক সেটাই আমি চাই : আগামী নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই সব দল নির্বাচনে আসুক। ইলেকশন করুক, কার কোথায় কতটুকু যোগ্যতা আছে। আওয়ামী লীগ কখনও ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসেনি। আসবেও না। আওয়ামী লীগ কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাবেন কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সময়ে আমন্ত্রণ নিমন্ত্রণ একটু কমই দেখা যাচ্ছে। করোনা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ঢুকতে দিত না। তার পরও আমি আমার অফিসে একটু জোর করেই এনেছি, কতদিন আর দূরে থাকা যায়। তবে করোনার কারণে এবার একটু চিন্তা করতে হবে। অনেকে আসতেও পারবে না। নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত কে আসবে কে আসবে না। সেখানে আমরা তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না। রাজনীতি করতে হলে দলগুলো নিজে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই সব দল অংশগ্রহণ করুক।
তিনি বলেন, গতবার যখন নির্বাচনে এলো, বিএনপি ৩০০ আসনের বিপরীতে সাড়ে সাতশ’ নমিনেশন দিয়ে হেরে গেল। তখন সব দোষ কার? আমাদের! জনগণের কাজ করে, জনগণের মন জয় করে, জনগণের ভোট নিয়েই আওয়ামী লীগ কিন্তু বারবার ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ কিন্তু কখনও কোন ডিকটেটরের পকেট থেকে বের হয়ে আসেনি, বা ইমার্জেন্সি দিয়ে কারও ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ভোটের মাধ্যমেই এসেছে। নির্বাচনের মাধ্যমেই এসেছে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ দেশে নির্বাচনের যতটুকু উন্নতি, যতটুকু সংস্কার, এটা কিন্তু আওয়ামী লীগ এবং মহাজোট করে সবাইকে নিয়েই করে দিয়েছি। এরপর যদি কেউ না আসে সেখানে আমাদের কী করণীয়। হারার ভয়ে আসব না। আর একেবারে সবাইকে লোকমা তুলে খাইয়ে দিতে হবে। জিতিয়ে দিতে হবে তবে আসব, এটা তো আর হয় না।
মিলিটারি ডিকটেটররা ওভাবেই করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের (বিএনপি) ওটাই অভ্যাস তারা তো জনগণের কাছে যেতে ভয় পায়। জনগণের সামনে ভোট চাইতে ভয় পায়, এটাই বাস্তবতা। অগ্নিসন্ত্রাস করে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের কি মানুষ ভোট দেবে? কখনও দিতে পারে না।
কারণ, সেই পোড়া ঘা তো এখনও সবার শুকায়নি। এখনও মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। গ্রেনেড হামলায় যারা আহত। যারা লুটপাট করে খেয়েছে। সেই কথাগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। তবে আমরা তো চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। অন্তত আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে তো ক্ষমতায় আসে না, আসেও নাই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় এসেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ডিসেম্বর মাসে আমরা দলের সম্মেলন করবো। দল সিদ্ধান্ত নেবে। আর পরবর্তী বছরই নির্বাচন। নির্বাচনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। আর দলের প্রত্যেকটা বিষয়ে গঠনতন্ত্র মেনে আমরা সিদ্ধান্ত নিই। প্রত্যেকবার আমরা কী কী অঙ্গীকার করেছিলাম, কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি তার হিসাব করি। আগামীতে আমরা কী করব সেটাও সেভাবে তৈরি করি।
বিএনপির খুঁটির জোর থাকলে বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিত না : সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির তো খুঁটির জোর নেই। যদি সেটা থাকত তাহলে তো তারা বিদেশীদের দ্বারে দ্বারে যেত না, ধর্ণা দিয়ে বেড়াতো না। জনগণের কাছে যেত। আসলে জনগণ বিএনপিকে সবক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা কোন মুখ নিয়ে জনগণের কাছে ভোট চাইতে যাবে। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো, পেট্রোল বোমা মারা, গ্রেনেড হামলা, নাশকতা করে মানুষ খুন করেছে। এখন মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাবে কোন মুখ নিয়ে। পারছে না বলেই বিদেশীদের পিছে পিছে ঘুরছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অনেক হুমকি দিচ্ছে। এটাই তো তাদের কাজ। যত উন্নয়নই হোক, বিরোধিতা করাটাই তাদের কাজ। তবুও তারা যদি শক্তিশালী হতো, তা হলে অনেক কিছুই হতে পারত।
বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্র কী নাখোশ? র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, নিষেধাজ্ঞা (র‌্যাবের ওপর) তারা কতটুকু তুলবে জানি না, তবে যাদের দিয়ে এদেশের সন্ত্রাস দমন হয়েছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার অর্থ কী? সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া? এটাই প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। তাহলে কি তারা সন্ত্রাস দমনে নাখোশ? ৪০ বছর ধরে তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই তালেবানকেই ক্ষমতা দিয়ে চলে আসল যুক্তরাষ্ট্র। ৪০ বছর তো তারা রাজত্ব করল। তা হলে তাদের ব্যর্থতার কথা বলে না কেন?
র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন সময় নানা রকম ঘটনা ঘটায়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশেরই কিছু লোক স্থানীয়ভাবে সেখানে থাকে। তারা সেখানের সিনেটরদের কাছে বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে। এসব তথ্য দিয়ে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে। যারা এসব করে তারা কিন্তু এক একটি অপকর্ম করেই দেশ ছাড়া।
তিনি বলেন, র‌্যাবের ওপর তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন নিষেধাজ্ঞা দিল, আমার প্রশ্ন হচ্ছে র‌্যাব সৃষ্টি করেছে কে? এটি তো যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শেই হয়েছে।
তারাই তো র‌্যাব সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছে। র‌্যাবের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, হেলিকপ্টার, আইটি সিস্টেম সবই যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া। যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, অভিযোগ জানায়- তখন তো বলা লাগে যেমন ট্রেনিং দিয়েছে তেমনই কাজ করছে। এখানে আমাদের করার কী আছে? ট্রেনিং যদি ভাল হতো তা হলে তো একটু কথা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা সংস্থা র‌্যাব পুলিশ যেই হোক, তারা যদি কোন অপরাধ করে তার কিন্তু বিচার হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ইচ্ছামতো গুলি করে মারলেও বিচার হয় না। তিনি বলেন, কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা গুম-খুন নিয়ে কথা বলেন। গুমের হিসাব নিয়ে দেখা গেল সবচেয়ে বেশি গুম জিয়াউর রহমানের আমলে। তারপর থেকেই তো চলছে। আমরা যখন তালিকা চাইলাম ৭৬ জনের তালিকা পাওয়া গেল। এর মধ্যে এমনও আছে আরেকজনকে শায়েস্তা করতে মাকে লুকিয়ে রেখেছে। কেউ বোনকে লুকিয়ে রেখেছে। আবার দেখা গেছে ঢাকা থেকে খুলনা চলে গেছে।
তিনি বলেন, তালিকায় এমনও নাম আছে ভারত থেকে কিছু পলাতক আসামি। তাদের নামও তালিকায়। এটা কেমন করে হয়? এমনও হয়েছে যে তালিকায় নাম আছে কিন্তু লুকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই বিষয়গুলো আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি। এ রকম গুমের ঘটনা যখনই ঘটে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুঁজে বের করে। গুম যত বড় করে দেখানো হয়, তাদের খুঁজে বের করার খবরটি যদি বড় করে দেখাত হতো তাহলে বাংলাদেশের বদনাম হতো না।
আগামী বছর মহাসঙ্কটের, তবে ঝুঁকিতে নেই বাংলাদেশ : সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী বছর বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছেন বিশ্বের সবাই। এ নিয়ে সবাই আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশবাসীকে নিজ নিজ জমিতে চাষাবাদ করার জন্য আবারও অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী একটা আশঙ্কা, আগামী বছর একটা মহাসঙ্কটের বছর হবে। সেই জন্য আগ থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নেয়া দরকার। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টা বেশি বিবেচনা করার দরকার।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, যারা স্বাধীনতা বিরোধী, যারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই দেশের মেয়েদের ধর্ষণ করেছে, গণহত্যা, লুটপাট করেছে পঁচাত্তরের পরে তারাই ক্ষমতায় এসেছে। তাদের সঙ্গে যারা হাত মেলাতে পারে, আর জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারে- সেই দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখা কত দুরূহ, কত কঠিন সেটা নিশ্চয় সবাই বুঝতে পারেন।
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে সরকার গঠন করার পরে দেশে নানা ধরনের সঙ্কট সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমর্থন ছিল বলেই প্রতিটি সঙ্কট মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। যখন বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছিল, বাংলাদেশে শুধু একটি ঘটনাই ঘটেছিল হলি আর্টিজান), তাও কিন্তু ১২ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করেছি। এরপর থেকে তেমন কোন ঘটনা ঘটতে আমরা দেইনি।
করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভ যথেষ্ট ভাল। যদি কোন সঙ্কট আসে. তাহলে তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো সক্ষমতা আছে কীনা সেটা দেখা হয়। আমাদের পাঁচ মাসের খাদ্য কেনার সক্ষমতা আছে। আর বাংলাদেশ কখনও ঋণ নিয়ে ঋণখেলাপী হয়নি, সময়মতো পরিশোধ করেছে।
সঙ্কট মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের কিছু কিছু পত্রিকা সারাজীবনই বাংলাদেশের খারাপ কথাটা বলতে পারলেই যেন স্বস্তি পায়। এটা আমি যুগ যুগ ধরে দেখছি। এ রকম এক ধরনের মানুষ থাকে। সব সময় নেতিবাচক চিন্তা অথবা পরশ্রীকাতরতায় ভোগে। মানুষ যতই ভাল করুক, তাদের চোখে ভাল হওয়া যাবে না। তবে সেটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই, চিন্তাও করি না। জনগণের ওপর আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে। আর যে কোন ক্ষেত্রে দেশের ঝুঁকি নেই, এটুকু বলতে পারি।
বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রামের হুমকি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশটা আমাদের সকলের। সেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অধিকারের আন্দোলন-সংগ্রাম, হুমকি-ধমকি অনেক কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। সেটা তো বিরোধী দলের কাজ। তা না করলে কীসের বিরোধী দল। বিরোধী দল যদি শক্তিশালী হতো তা হলে তো অনেক কিছুই হতো। তিনি বলেন, এক বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ, ৪৪ মিলিয়ন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে ’৯৬ সালে সরকার গঠন করেছিলাম। তবে আমরা যখনই ক্ষমতায় আসি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থাতেও আমাদের দেশের অর্থনীতি এখন যথেষ্ট শক্তিশালী এটা আমি নিশ্চিত করতে পারি।
সভাপতি পদ থেকে বিদায় নিতে প্রস্তুত : আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলন এবং নেতৃত্বের চমক আনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। আওয়ামী লীগের একজন কাউন্সিলরও না চাইলে আমি কোন দিনও পদে থাকব না।
তিনি নিজেও আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব চান উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আওয়ামী লীগের একটি কাউন্সিলরও যদি বলে আমাকে চায় না, আমি কোন দিন থাকব না। যেদিন আমার অবর্তমানে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করেছিল, তখন থেকেই এই সত্যটা মেনে যাচ্ছি। এটা ঠিক দীর্ঘদিন হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক। নেতৃত্ব কাউন্সিলররা নির্বাচিত করেন। তাদের সিদ্ধান্তটাই চূড়ান্ত। আর আমার তো আসলে সময় হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি করে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দিয়ে যান। এই স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদার স্বীকৃতি কিন্তু জাতিসংঘই দিয়েছিল। এরপরে দেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি হয়েছে। ক্ষমতা ছিল বন্দী, গণতন্ত্র ছিল না। ছিল মার্শাল ল, মিলিটারি শাসন, কার্ফু ইত্যাদি ইত্যাদি।
আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে এনেছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে আমরা গণতন্ত্র উদ্ধার করি। আমরা একটানা তিনবার ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় আছি, গণতান্ত্রিক ধারা বাংলাদেশে অব্যাহত আছে। এর বাইরে অনেক চড়াই-উতরাই, খুন-খারাবি, অগ্নিসংযোগ, অগ্নিসন্ত্রাস অনেক কিছু হয়েছে। এর পরেও আমরা ক্ষমতায় ছিলাম বলেই আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এই সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন বিদায় নেয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।
আমাকে নিয়ে অত লেখালেখির দরকার নেই : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাকে নিয়ে অত লেখালেখির দরকার নেই। আমি জনগণের সেবা করতে এসেছি। আমার বাবা দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তার যে স্বপ্ন ছিল সেটাই বাস্তবায়ন করা আমার একমাত্র লক্ষ্য। আর আমার নিজের তো কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই। তবে দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কতটুকু দিতে পারলাম এটাই হচ্ছে আমার সব থেকে বড় স্বপ্ন। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু নেই। এই যে একটা ঘর (গৃহহীন-ভূমিহীনদের মাঝে বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ) দেয়ার পরে মানুষের যে হাসিটা এটাই তো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা।
১৯৭৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দেশে অস্থিরতা ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমর্থন ছিল বলেই আমরা সব পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দিয়ে অর্থনীতির চাকাটা সচল রেখেছি। বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ তৈরি করে দিয়ে গেলাম। আগামী ১০০ বছরে বদ্বীপটা কীভাবে চলবে সেটা মাথায় রেখেই একটা কাঠামো তৈরি করে দিয়ে গেলাম। যখনই যারা আসবে আমি মনে করি এটা অনুসরণ করবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পারিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিশোধন সবই করতে পারবে। সেভাবে যদি করতে পারে হবে বাংলাদেশ কখনই পিছিয়ে যাবে না।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে : মিয়ানমারের সামরিক শাসক কারও কথা মানতে চায় না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু জাতিসংঘ কেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আসিয়ান দেশগুলোও কম চেষ্টা করেনি। অন্য দেশগুলোও করছে। মিয়ানমার সরকার সেখানে মিলিটারি রুলার, তারা তো কারও কথাই মানছে না।
নির্যাতনের শিকার হয়ে নতুন করে কোন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে চাইলে তাদের প্রশ্রয় না দেয়ার ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যেসব রোহিঙ্গাকে থাকতে দিয়েছি তাদের সমস্যা নিয়েই আমরা জর্জরিত। এর ওপর আমাদের মানুষের ওপর বোঝা কীভাবে চাপাব? সে জন্য আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। আলোচনা করে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি তারা যাতে এদের ফেরত নিয়ে যায়। তিনি বলেন, মিয়ানমারে এখন যে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে আমরা নাক গলাতে যাই না এবং যাবও না। অন্য দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে আমাদের মাটি কেউ ব্যবহারও করতে পারবে না।
মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে আসছে। মানবিক কারণে নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ সাময়িক আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সঙ্গে ও নিরাপদে তাদের নিজ দেশে ফিরতে পারে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনৈতিক সমর্থন ও মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, জাতীয় আদালত এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান মামলায় সমর্থন প্রদান, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত দমন-পীড়ন বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা করা, আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যে মিয়ানমারের অঙ্গীকারসমূহ ও কফি আনানের কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করা, মিয়ানমারে জাতিসংঘসহ মানবিক সহায়তাকারীদের নির্বিঘ্নে প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছি। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার জন্য জাতিসংঘকে কার্যকর ও জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছি।
বহুপক্ষীয় ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান সৃদৃঢ় করেছে : প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ সকল সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ বহুপক্ষীয় ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী করোনা মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সঙ্কট ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তির জন্য অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অধিক পারস্পরিক সংহতি প্রদর্শন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এ সকল সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশসমূহ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা-নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশ^ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী চলমান সঙ্কট নিরসনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তি ও উন্নয়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতির প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।