দুর্গত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে

17

দুই দফা বন্যায় বৃহত্তর সিলেট, হাওরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আউশ ধানেরও। এদিকে আমন ধানের চারা রোপণের সময় চলে যেতে থাকলেও অনেক এলাকায় বীজতলাই করা যাচ্ছে না। বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে রোপা আমন চাষাবাদে কৃষকদের সক্ষমতা ও আগ্রহ দুটিই কমে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার সাড়ে ১৬ হাজার কৃষককে বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে বীজধান ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। অনুরূপ প্রণোদনা দেশের আরো অনেক অঞ্চলে প্রদান করা জরুরি।
জানা যায়, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করা যাবে। সে হিসেবে বীজতলা তৈরির এখনই চূড়ান্ত সময়। কিন্তু নানা কারণে অনেক কৃষক বীজতলা তৈরিতে পিছিয়ে যাচ্ছেন। তাই কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে সার ও বীজধান সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষকপ্রতি পাঁচ কেজি করে আট হাজার ১০০ কৃষককে বিআর ২২ ধান এবং আট হাজার ৪০০ জনকে পাঁচ কেজি করে বিআর ২৩ ধান দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১৬ হাজার ৫০০ কৃষকের প্রত্যেককে ১০ কেজি জিওপি এবং ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সরকারিভাবে বিআর ৪৯, ৭৫, ৮৭, ২২, ২৩ এবং বিনা ১৬, ১৭ ও ২৩ ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। বিশেষ করে উচ্চ ফলনশীল বিআর ২২ ও ২৩ বীজধানের চাষাবাদে প্রচারণা চালিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই বীজের চাহিদা বেশি থাকলেও কৃষকরা যথাসময়ে পর্যাপ্ত বীজধান পাননি বলে অভিযোগও রয়েছে। জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ৮১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা হলো চার হাজার ৩০০ হেক্টর। বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে সেই ক্ষতি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে।
বন্যায় বৃহত্তর সিলেটের অন্যান্য জেলায়ও বোরো ও আউশ ধানের বড় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলেও। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ আরো কিছু এলাকায় চাষাবাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা অববাহিকা তৃতীয় দফা বন্যার শিকার হয়েছে। এসব এলাকার দুর্গত কৃষকদেরও পাশে দাঁড়াতে হবে।