জায়গা সংকটে জগন্নাথপুর খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ

8

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে খাদ্য গুদামে জায়গা না থাকায় চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। অসহায় বোধ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ সমস্যা সমাধানে আরেকটি নতুন খাদ্য গুদাম নির্মাণ অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, বিগত এরশাদ সরকারের আমলে জগন্নাথপুর উপজেলা সদরে ৫০০ মেট্রিকটন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা হয়। পুরনো এ খাদ্য গুদামটি এখন প্রায় জরাজীর্ণ হলেও ব্যবহার হচ্ছে। তবে সময়ের ব্যবধানে জগন্নাথপুরে খাদ্যশষ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ন্যায্যমূল্যে সরকারের কাছে খাদ্যশষ্য হিসেবে প্রতি বছর ধান-চাল বিক্রি করতে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। সরকারও বছর বছর ধান-চাল কেনার চাহিদা বৃদ্ধি করছে। তবে জগন্নাথপুর খাদ্য গুদামে জায়গা সংকটের কারণে প্রতি বছর ধান-চাল সংগ্রহ কমবেশি ব্যাহত হয়। এবার ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্র জানায়, এবার কৃষকদের কাছ থেকে ১৬৭৭ মেট্রিক টন ধান ও মিলারদের কাছ থেকে ৭৮২ টন চাল সংগ্রহ করা হবে। গত ১১ মে থেকে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত। এর মধ্যে মাত্র ৩৬৫ টন ধান সংগ্রহ করা হলেও চাল একেবারেই করা হয়নি। শুধু গুদামে জায়গা সংকটের কারণে গত ১৫ দিন ধরে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে।
১২ জুন রবিবার জগন্নাথপুর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শিমলা রায় জানান, বর্তমানে গুদামে ৫৮৯ টন ধান-চাল মজুদ আছে। গুদামে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। যে কারণে গত ১৫ দিন ধরে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। এ সময় গুদামে ধান বিক্রি করতে আসা কেশবপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মজিদ সহ অনেকে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেক আশা নিয়ে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে এসেছিলাম। গুদামে জায়গা না থাকায় সংশ্লিষ্টরা আমাদের ধান কিনছেন না। এতে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। তারা আরো জানান, খোলা বাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম রয়েছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা। আর সরকার কিনছে ১০৮০ টাকায়। এখন সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে না পারায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই কৃষকদের বাঁচাতে জগন্নাথপুরে আরেকটি নতুন গুদাম নির্মাণের দাবি জানান সচেতন মহলের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আবদুর রব জানান, গুদামে জায়গা সংকটে ধান-চাল সংগ্রহ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমাদের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে গুদামে মজুদ থাকা খাদ্যশষ্য অন্য গুদামে সরিয়ে আবার ধান-চাল সংগ্রহ করা হবে। তবে জগন্নাথপুরে আরেকটি নতুন গুদাম নির্মাণ এখন জরুরী হয়ে পড়েছে।