ঢেলে সাজানো হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা ॥ পিইসি, জেএসসি পরীক্ষা ও এসএসসিতে থাকবে না বিভাগ বিভাজন

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রচলিত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। এর জন্য সম্পূর্ণ নতুন এক কারিকুলাম বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে শিক্ষা বিভাগ। ইতোমধ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ নামে নতুন কারিকুলামটি জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। যার খসড়া মৌখিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। নতুন এই রূপরেখায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা আর চাপে নয় বরং আনন্দের সঙ্গে শিখবে। নতুন কারিকুলামে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোন পরীক্ষা থাকছে না। তুলে দেয়া হবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষাও (জেএসসি)। শুধু তাই নয়, নতুন এই কারিকুলামে মাধ্যমিক পর্যন্ত কোন বিভাগ বিভাজন থাকবে না। আর উচ্চ মাধ্যমিকে দুই বছরের পরীক্ষা মূল্যায়ন করে দেয়া হবে চূড়ান্ত ফল। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন কারিকুলামে সব শ্রেণীতে জোর দেয়া হবে শিখন পদ্ধতির ওপর।
গত সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি) নতুন এই কারিকুলাম চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়। এ সময় জানানো হয়, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত চলমান শিক্ষাক্রমের ভুলত্রুটি সংশোধন, আন্তর্জাতিক মান ও সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বর্তমান কারিকুলাম আধুনিক করছে সরকার।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোন পরীক্ষা থাকছে না। চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়তে হবে আটটি বই। তবে সব শ্রেণীতেই শিখনকালীন মূল্যায়নেই বেশি জোর দেয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা থাকছে না।
নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন হলে, মাধ্যমিক পর্যন্ত থাকবে না মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ক কোন বিভাজন। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর সবাইকে পড়তে হবে ১০টি বিষয়। দশম শ্রেণীর পাঠ্যসূচীর ওপরই অনুষ্ঠিত হবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে ৯ম ও ১০ম শ্রেণীতে জীবন ও জীবিকা বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী কৃষি, সেবা বা শিল্প খাতের একটি অকুপেশনে দক্ষতা অর্জন করবে এবং ১০ম শ্রেণী শেষে যে কোন একটি অকুপেশনে কাজ করার মতো পেশাদারি দক্ষতা অর্জন করবে। বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার বিবরণীতে বলা হয়, নতুন কারিকুলামে প্রমিত বাংলা ভাষায় ভাব আদান-প্রদানের (শোনা, বলা, পড়া, লেখা, দেখা ও অনুভব করার) মৌলিক দক্ষতা অর্জন করা সাহিত্যপাঠে আনন্দ লাভ করতে সমর্থ হওয়া, বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে সৃজনশীল ও শৈল্পিকভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারা এবং পরমতসহিষ্ণুতার সঙ্গে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কার্যকর ও কল্যাণমুখী যোগাযোগে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য।
জানা যায়, নতুন কারিকুলামে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয় থাকবে। আর মাধ্যমিক স্তরে বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞানের পাশাপাশি জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়েও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এ ছাড়া কারিগরি ও মাদ্রাসায় স্তরভিত্তিক নির্বাচিত বিষয়গুলোর সঙ্গে মাদ্রাসায় কোরান, হাদিস ইত্যাদি এবং কারিগরিতে ট্রেডের বিশেষায়িত বিষয়গুলোর যৌক্তিক সমন্বয় থাকবে। আর মাধ্যমিকে (একাদশ ও দ্বাদশ) আবশ্যিক বিষয় থাকবে ৩টি। নৈর্বাচনিক বিষয়ও থাকবে যেকোনো তিনটি। তবে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় তালিকা থেকে যে কোন তিনটি বিষয় নেয়ার সুযোগ থাকবে। এ ছাড়া প্রয়োগিত বিষয় হিসেবে যে কোন একটি পেশাদারি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য নির্বাচিত বিষয়গুলো থেকে যে কোন একটি বিষয় নেয়ার সুযোগ থাকবে।
স্তরভিত্তিক মূল্যায়ন কৌশলের বিষয়ে বলা হয়, শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন সময়েই তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন হবে। আর ৪র্থ থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে শ্রেণীকক্ষে শিখনের সময়ে মূল্যায়ন হবে ৬০ ভাগ আর সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ ভাগ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয়ে পুরোটাই শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। একইভাবে ষষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান এবং ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ ভাগ। আর সামষ্টিক মূল্যায়ন ৪০ ভাগ। এ ছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে শতভাগ। ৯ম-১০ম শ্রেণীতে (পাবলিক পরীক্ষাসহ) বাংলা, ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান এবং ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৫০ ভাগ, সামষ্টিক মূল্যায়নও ৫০ ভাগ। আর জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি শিখনকালীন মূল্যায়ন ১০০ ভাগ। দশম শ্রেণীর পাঠ্যসূচীর ওপর থাকবে পাবলিক পরীক্ষা অর্থাৎ এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে শ্রেণীকক্ষে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৩০ ভাগ। আর সামষ্টিকভাবে মূল্যায়ন হবে ৭০ ভাগ। নৈর্বাচনিক/বিশেষায়িত বিষয়ে কাঠামো ও ধারণায়ন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের পাশাপাশি প্রকল্পভিত্তিক, ব্যবহারিক ও অন্যান্য উপায়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে। প্রয়োগিক বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে শতভাগ। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যসূচীর ওপর প্রতি বছর শেষে একটি করে পরীক্ষা হবে যা বর্তমানে এইচএসসি পরীক্ষা হিসেবে প্রচলিত। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় ফলাফলের সমন্বয়ে চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারিত হবে।
জানা যায়, চলতি বছর মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণীর শুরু হয়েছে। আগস্টে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণীর পাইলটিং শুরু করা হবে বলে জানা গেছে। ২০২৩ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। ২০২৪ সালে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণী এ শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণী যুক্ত হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণী যুক্ত হবে।
ইতোমধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশের ৬২টি স্কুল, কারিগরি ও মাদ্রাসায় শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। আর সব প্রতিষ্ঠান থেকেই খুব ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে নতুন শিক্ষা কারিকুলামের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি জনকণ্ঠকে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে মানুষের জীবন-জীবিকার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। যেখানে প্রচলিত পেশার ৩ ভাগের ২ ভাগ ২০৩০ সালের মধ্যে অবলুপ্ত হয়ে যাবে এবং ৬৫ভাগ শিক্ষার্থী যারা এখন প্রাথমিক শিক্ষায় আছে তারা কর্মজগতে প্রবেশ করে যে কাজ করবে তা এখনও অজানা। ভবিষ্যতের জীবন ও জীবিকার জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করা সম্ভব নয় বরং রূপান্তরযোগ্য দক্ষতা ও যোগ্যতায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। যেন তারা নিজেরাই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে সর্বোচ্চ পারদর্শিতা প্রদর্শন করতে পারে। তিনি বলেন, পাইলটিং শেষে আগামী বছর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে নতুন কারিকুলাম। সঙ্গে অন্য স্তরেও পাইলটিং শুরু করা হবে। মন্ত্রী বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের চেয়ে কাজকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্লেন্ডেড লার্নিং অনেক জরুরী। কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিখবে। এটি সে ক্লাসে, বাড়িতে, বন্ধু ও প্রতিবেশীসহ অনেকের কাছ থেকে শিখতে পারবে। শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন কারিকুলামে পড়ার চেয়ে কাজ বেশি। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে কাজ দেয়া হবে। তারা সেটি করে শিক্ষকদের কাছে জমা দেবে। এখানে তেমন বোঝানোর কিছু নেই। কাজের মাধ্যমে সে শিখবে। সে কাজের ওপর তার অভিজ্ঞতা তৈরি হবে। আমরা সেসব নিয়ে কাজ করছি। সারাদিন সে কী করেছে সেটি ডায়েরিতে লিখতে বলা হতে পারে। পড়ার সময় জানবে তার কী কী করা উচিত আর সে কী করেছে। প্রতিদিন তার কী কী খাওয়া উচিত আর সে কী খেয়েছে সেটি সে নিজেই বুঝতে পারবে। প্রতিদিন তারা নিজের কাজ নিজে করবে। সেগুলো এখন পাঠ্য হয়ে গেছে। যেগুলো বাসায় রেখেও করা সম্ভব হবে। কিছু কিছু কাজ আছে শিক্ষকরা যদি ফোনেও বলেন তাহলেও সেটি করা সম্ভব। আমরা এরই মধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ক্লাসের জন্য প্রতিটি বিষয়ে শিক্ষক নির্দেশিকা দেয়া হবে। সেখানে কী কী করতে হবে, দেয়া হবে সে সংক্রান্ত ধারণা। প্রতি সপ্তাহে একদিন কারিকুলাম প্রণয়ন কমিটির সঙ্গে শিক্ষকরা আলোচনায় বসে কোন সমস্যা থাকলে সেসব নিয়ে আলোচনা করে করা হবে সমাধান।
এটি পদ্মা সেতু তৈরির মতোই বড় একটি চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু তৈরি করা তো সহজ ছিল না। কিন্তু এটি করতে হয়েছে। আমাদেরও এটি করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার যোগ্যতা অর্জন করার মতো তৈরি করতে এটি আমাদের করতে হবে। এর জন্য শিক্ষকদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ শুরু করেছি। এ বছরের মধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে আশা করছি। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকদের মানসিকতাও পরিবর্তন করা জরুরী উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটা প্রচলিত পদ্ধতির মধ্যে থাকতে থাকতে মানুষের মধ্যে অভ্যস্ততা তৈরি হয়ে যায়। তখন নতুন কিছুকে গ্রহণ করা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আমাদের সন্তানদের জন্য, তাদের হাতেকলমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার জন্য এটি জরুরী। তাই সবার সহযোগিতা ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গেই জয়ী হতে হবে।
এক্ষেত্রে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কিভাবে কতদূর পর্যন্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, নতুন কারিকুলামের খসড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে আর কোন বাধা নেই। আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, এর জন্য আমরা আমাদের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে একটা বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। মাস্টারট্রেইনারদের একটা নির্দিষ্ট সময় দেশের সব জেলা-উপজেলায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। একই সময়ে দেশের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষিত করা হবে। আমরা তো আশা করছি ৫ দিনে সারাদেশের সকল শিক্ষক প্রশিক্ষণ পেয়ে যাবেন। এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞে শিক্ষকদের সহযোগিতা সবচেয়ে জরুরী হবে। তিনি বলেন, যেহেতু নতুন কারিকুলামের খসড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নে আর কোন বাধা নেই। আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
জানা যায়, নতুন কারিকুলাম প্রণয়নে ২০১৭ সালে কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তখন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে দুটি কমিটি করা হয়। এরপর আবার ১০ জন শিক্ষাবিদ নিয়ে ‘কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটি’ গঠন করা হয়। ২০২০ সালের শেষ দিকে তারা ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী’ নামে ১১৪ পৃষ্ঠার রূপরেখা জমা দেয়। এই রূপরেখার ওপর বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদদের মতামত নেয় এনসিটিবি। এরপর তা ন্যাশনাল কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটির (এনসিসি) কাছে পাঠানো হয়।