সন্ধ্যা নামলেই শাবির সড়কে তৈরি হয় আলো-আঁধারির পরিবেশ

45

শাবি থেকে সংবাদদাতা :
কোনো কোনো সড়কে রাস্তার পাশে থাকা ল্যাম্পপোস্টের অধিকাংশ বাতি জ্বলছে না, আবার কোথাও কোথাও ল্যাম্পপোস্টে লাগানো বাতির কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় বাতি জ্বলছে ধুঁকে ধুঁকে; যার কারণে তৈরি হচ্ছে আলো-আঁধারির পরিবেশ। সড়কে তৈরি হওয়া আলো-আঁধারির এই দৃশ্য শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি)।
সন্ধ্যার পর আলোক স্বল্পতার কারণে শাবি’র অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়ক এবং স্থান অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। ফলে যেকোনো সময় অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, চলাচলের সুবিধার্থে এবং অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে অতিসত্ত্বর নষ্ট হয়ে যাওয়া সড়ক বাতিগুলো মেরামত করা প্রয়োজন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যাম্পাসের ল্যাম্পপোস্টের ল্যাম্পসহ বৈদ্যুতিক অন্যান্য কাজ বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিবছর ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতো টাকা বরাদ্দ থাকার পরেও এই ল্যাম্প পোস্টের বাতিগুলো পরিবর্তন ও মেরামতের অভাবে অন্ধকারের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে কিছু ক্ষেত্রে ক্যাম্পাসের রাতের সৌন্দর্য ঠিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তার দু’পাশে প্রায় ১৩৫টি ল্যাম্পপোস্টের রয়েছে, যার মধ্যে ৪৫টি ল্যাম্পপোস্টের একটি করে বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ২৫টি ল্যাম্পপোস্টের দুটো বাতিই নষ্ট। এদিকে, চেতনা-৭১ থেকে ক্যাফেটেরিয়ার রাস্তায় এবং শহীদ মিনার যাওয়ার পথে ল্যাবের সামনে কোনো ল্যাম্পপোস্টের বাতি জ্বলে না। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রী হলের রাস্তায় ৬টি ল্যাম্পপোস্টের কোনো বাতি জ্বলে না। ছাত্রদের আবাসিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে যাওয়ার পথে ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও রয়েছে আলোক স্বল্পতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শরীফ আহমেদ বলেন, রাতের অন্ধকারে এই জায়গাগুলোতে চলাচলে ঝুঁকির সৃষ্টি হচ্ছে। এখন সামনে বর্ষাকাল ক্যাম্পাসে সাপের উপদ্রব বাড়বে, অন্ধকারে বিষ-ধর সাপ হলে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। দ্রুত ল্যাম্পপোস্টের নষ্ট বাতিগুলো ঠিক করে দিলে এবং রাস্তার যে সকল জায়গায় এখনো অন্ধকার সেখানে আলোর ব্যবস্থা করে দিলে আমাদের চলাচলে সুবিধা হবে।
ল্যাম্পপোস্টের নষ্ট হয়ে যাওয়া বাতি সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি গ্রুপের এক পোস্টে মো. রাসেল শেখ নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘গতবছর (২০২১ সাল) ডিসেম্বরে এ নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলাম। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মেরামতের নামে ৩০০ টাকা দামের এনার্জি বাল্ব লাগানো হয়, আছেও। আশা করি এবার ভালো মানের কাজ হবে।’ গতবছরে ওই শিক্ষার্থীর দেওয়া পোস্টটিতে দেখা যায়, সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এবং ক্যাম্পাসের রাতের সৌন্দর্যহীনতা’র কথা উল্লেখ করে তিনি নষ্ট বাতিগুলো মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, ল্যাম্পপোস্টের আশেপাশের ডালপালা পরে লাইন ছিড়ে যায় এবং বৃষ্টির পানির কারণে বাতিগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। মাঝে-মাঝে শট সার্কিটের কারণে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হয়ে থাকে। নষ্ট হয়ে যাওয়া বাতিগুলো দ্রুত ঠিক করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।