পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে সিলেটে বন্যার আশঙ্কা

11

স্টাফ রিপোর্টার :
ফের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে সিলেটে বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। পানি বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কিত হচ্ছেন কৃষকরা। সুরমায় পানি বাড়লে সুনামগঞ্জের সীমান্ত ও হাওরের নদ-নদীতেও পানি বাড়তে শুরু করবে। ফলে ফসল রক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখা ও এতো কম সময়ের মধ্যে ধান কাটা অসম্ভব হয়ে পড়বে। শঙ্কার সাথে বোরো ফসল তুলতে শেষ চেষ্টা করছেন লাখ লাখ কৃষক।
আবহাওয়া ও বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের প্রধান নদী সুরমার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে এখনও তা বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সীমান্ত নদী যাদুকাটার পানি বেড়েছে ছয় সেন্টিমিটার এবং পুরাতন সুরমা নদীর পানি বেড়েছে পাঁচ সেন্টিমিটার। এদিকে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাওরের ফসল রক্ষায় নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। গত ১৫ দিন ধরে জেলার প্রধান ৮০টি বাঁধ টিকিয়ে রাখার লড়াই করছে হাওরবাসী।
পাউবো সুনামগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, “মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে প্রায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি এখন সুরমা নদীসহ বিভিন্ন সীমান্ত নদ-নদীতে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হাওরের সবগুলো বাঁধ চরম ঝুঁকির মধ্যে আছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি প্রায় ৬২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলে জেলার অধিকাংশ হাওরের ফসলই তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, জেলায় আবাদ করা দুই লাখ ২২ হাজার ৫০৮ হেক্টর জমির মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার ২৩০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে। গড় কর্তন প্রায় ১০ ভাগ। তবে এখনও দুই লাখ হেক্টরের চেয়ে বেশি জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। দ্রুত ধান কেটে নিতে আমরা প্রচার চালাচ্ছি। আমাদের কমম্বাইন হার্ভেস্টার ও রিপার মিলিয়ে প্রায় ৩৯২টি যন্ত্র হাওরে ধান কাটছে। বাইরে থেকেও কৃষকরা নিয়ে এসেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢল দ্রুত বাড়ছে। গত ১৫ দিন ধরে মাটির অস্থায়ী বাঁধগুলো যুদ্ধ করে টিকে আছে। পানি বাড়ায় ধসে বা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধেই প্রশাসন স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কাজ করছে।