শ্রীলঙ্কায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকি

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকি দিয়েছে শ্রীলঙ্কার মূল বিরোধী দল। শুক্রবার পার্লামেন্টে সামাগি জানা বালাওয়েগয়া পার্টির প্রধান সাজিথ প্রেমাদাসা এই হুমকি দেন। তিনি বলেন, সরকার যদি অর্থনৈতিক সঙ্কট নিরসন এবং শাসনের উন্নতি না ঘটায় তাহলে পার্লামেন্টে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। ঋণ জর্জরিত শ্রীলঙ্কার হাতে আমদানি করার মতো অর্থ নেই। ফলে জ্বালানি, বিদ্যুৎ, খাবার এবং ওষুধের সঙ্কট ক্রমাগত বাড়ছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিরতিহীনভাবে রাজপথে বিক্ষোভ চলছে। পাঁচদিন জরুরী অবস্থা এবং দুইদিন কার্ফু জারি করেও বিক্ষোভ থামানো যায়নি।
গত সপ্তাহে পুরো মন্ত্রিসভা পদত্যাগের পর অল্প কয়েকজন মন্ত্রী নিয়ে প্রশাসন পরিচালনা করছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বিরোধী দলগুলোকে সরকারে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। ক্ষমতাসীন জোটের ৪১ আইনপ্রণেতা জোট ছেড়ে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দেয়ার পরও সরকার দাবি করেছে, পার্লামেন্টে তারা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ। পার্লামেন্টে সামাগি জানা বালাওয়েগয়া পার্টির প্রধান সাজিথ প্রেমাদাসা বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক সঙ্কট স্বীকার করা এবং শাসনে উন্নতি ঘটাতে কাজ করা প্রয়োজন। না হলে আমরা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের দিকে যাব। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কাকে অবশ্যই ঋণখেলাপী হওয়া এড়াতে হবে। সরকারকে অবশ্যই ঋণ বাতিলে কাজ করতে হবে এবং ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে আর্থিক উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে।
শুক্রবার সকালে পার্লামেন্টের সদস্যরা পরস্পরের বিঘ্ন ঘটানোয় দুইবার অধিবেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। সাময়িকভাবে দুই পার্লামেন্ট সদস্যকে বহিষ্কারও করা হয়। অর্থনৈতিক সঙ্কটে পঙ্গু হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছে। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর তীব্র ঘাটতি এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা সামনের দিনগুলোতে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে বুধবার সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পীকার। খবরে বলা হয়েছে, দেশটির মোট জনসংখ্যা অর্থাৎ ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিয়মিত খাবার পাচ্ছেন না। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পর দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেও পদত্যাগ না করতে অনড় রয়েছেন। ২০১৯ সাল থেকে শ্রীলঙ্কার শাসন ক্ষমতায় রয়েছে রাজাপাকসে পরিবার। মঙ্গলবার তার ভাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেও ক্ষমতা না ছাড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে বেদনাদায়ক মন্দার মধ্যে দেশটিতে ব্যাপক দুর্দশার সৃষ্টি করেছে রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতাসহ খাদ্য ও জ্বালানির ঘাটতি। যে কারণে দেশটির সাধারণ জনগণের মাঝে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ক্ষুব্ধ জনগণ দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে।