বিশ্বময়ীর আঁচল পাতা

3

বাংলাদেশের তিন তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধুমাত্র একজন নারী নন। বরং একজন অসামান্য ও অনন্যসাধারণ নারী ব্যক্তিত্ব, একইসঙ্গে মমতাময়ী মাও। যার প্রধান পরিচিতি বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। রাষ্ট্র ও দেশ পরিচালনায় দূরদর্শী ও পারদর্শী, প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞ, দক্ষ ও অক্লান্ত, ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ। রাষ্ট্র ও দেশ পরিচালনায় নিজেকে যিনি সমর্পণ করেছেন নিঃস্বার্থভাবে। দেশপ্রেম ও মায়ের পরম মমতায় আগলে রেখেছেন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশকে। তদুপরি এখন তিনি বাংলাদেশের প্রভূত উন্নয়ন ও অগ্রগতির রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বে। মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লক্ষাধিক হতভাগ্য রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে অভিহিত হয়েছেন মানবতার জননী হিসেবে। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থানরত স্থানীয় এক্সিবিশন সেন্টার আয়োজিত ‘রিডিফাইনিং দ্য ফিউচার অব উইমেন’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে সে কথাটি স্মরণ করে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘মায়ের মমতা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে।’ বিরল এই নেতৃত্বগুণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে সমর্থ ও সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেছেন, নারী কেবল নারীই নয়, তাঁরা হলেন মা। মায়ের মমতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করলে, যিনি করেন, তিনি কখনও ব্যর্থ হতে পারেন না। জনসাধারণ তাঁকে সর্বদা সমর্থন দেবেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় সুযোগ্য দূরদৃষ্টিসম্পন্ন অকুতোভয় সর্বোপরি দুঃসাহসী নেতৃত্বের গুণে বাংলাদেশ শুধু এশিয়ায় নয়, বরং বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুধু বিশ্বের বিস্ময় নয়, বরং উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের এই স্বীকৃতি এসেছে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবির মতো আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, এ্যান্তোনিও গুতেরেস, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এমনকি বৈরী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পর্যন্ত। এমনকি ভয়াবহ হন্তারক ও সংক্রামক ব্যাধি করোনা মহামারী এবং তজ্জনিত দীর্ঘ লকডাউনও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। চরম এই দুঃসময়েও বিশ্বের বুকে সগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত স্বপ্ন সম্ভবের পদ্মা সেতু, প্রকৃতপক্ষেই শেখ হাসিনার অবিসংবাদিত অকুতোভয় সুদৃঢ়চিত্ত নেতৃত্বের প্রসাদগুণ ব্যতিরেকে ছিল অসম্ভব।
জাতির পিতার মতো দুর্জয় সাহস নিয়ে দেশের রাজনীতি ও জনগণের পক্ষে নিজের সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন শেখ হাসিনা, জীবনের সমূহ ঝুঁকি নিয়ে এখনও এগিয়ে চলেছেন। তাঁকে হত্যার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে বহুবার। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাও হয়েছে। তবে বেঁচে গেছেন অলৌকিকভাবে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ঘাতকের ঘৃণ্য তৎপরতা সফল হয়নি। তাঁর চারদিকে এখনও পরাক্রান্ত বহু শত্রু। যুদ্ধের ময়দানে একাই লড়ছেন মাথা উঁচু করে। সাম্রাজ্যবাদের কাছে নত হওয়া, স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ এবং দেশ ও জনগণের বিপদের মুহূর্তে দেশত্যাগ বা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার কোন ঘটনা নেই তাঁর জীবনে। বিশ্বজুড়ে যে জঙ্গীবাদের বিস্তার, তা নির্মূলে তিনি সর্বদা সোচ্চার। দেশের সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের তিনি দমন করছেন সাহসের সঙ্গে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির অগ্রযাত্রার মূল নায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই।