বদলে যাবে দেশের অর্থনীতির চিত্র

7

দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। দারিদ্র্য বিমোচনে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচীর পাশাপাশি চলছে মানুষের কর্মসংস্থানের প্রচেষ্টা। এই প্রক্রিয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে তোলা হচ্ছে ছোট-বড়-মাঝারি শিল্প কারখানা। প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে শিল্প জোন। শিল্পোন্নয়নে একদিকে যেমন মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে রফতানি আয়। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে এই প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই। শিল্পোন্নয়নের এই প্রক্রিয়ায় এবার শরীয়তপুর জেলায় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে গড়ে তোলা হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী। তাঁতবোর্ড ইতোমধ্যে ১২০ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে। ৯১১ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতু ঘিরে দুই প্রান্তেই চলছে সরকারী-বেসরকারী বিপুল কর্মযজ্ঞ। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে এলাকার চিত্র। সেতু এবং উন্নত মানের রাস্তার কারণে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল কাজে লাগাতে এসব অঞ্চলে শিল্পসহ নানা ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী উদ্যোক্তারাও শিল্প-কারখানা, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, পর্যটনসহ নানা খাতে বিনিয়োগ করছেন। রাজধানীর সঙ্গে কম সময়ে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা সামনে রেখে পদ্মার ওপারে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ থেকে শুরু করে বৃহত্তর খুলনা ও বরিশালের সকল জেলায় চলছে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড। সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে পদ্মা সেতুর বিস্তীর্ণ দুই প্রান্ত। শরীয়তপুরের শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী এই ধারণারই অন্তর্ভুক্তি।
রাজধানী ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে এখান থেকে ঢাকায় পৌঁছতে সময় লাগবে আধা ঘণ্টার কম। তাঁতবোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, এই সুবিধার কারণে প্রকল্পটির শতভাগ সাফল্য চিন্তা করা হচ্ছে। প্রকল্পে ভূমি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে গত মাস থেকে। চলছে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ। ভূমি উন্নয়ন শেষ হলেই শুরু হবে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ। আধুনিক এই প্রকল্পে তাঁতশিল্পের সঙ্গে থাকবে তাঁতিদের আবাসন ব্যবস্থা। নির্মাণ করা হবে তাঁত শেড, ডরমিটরি, রেস্ট হাউস, সাইবার ক্যাফে, বিদ্যুত উপকেন্দ্র, মার্কেট ও বিনোদন কেন্দ্র। তাঁতপল্লীতেই সপ্তাহে দুদিন বসানো হবে তাঁত পণ্যের হাট। সুতাসহ সবধরনের কাঁচামাল বিক্রয় ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। কাপড় বোনা, পোশাক তৈরি এবং বাজারজাত করা সবই রয়েছে প্রকল্পের আওতায়। বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন তাঁতশিল্প পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে তাঁতপল্লীতে। স্থানীয় অধিবাসীদের প্রত্যাশা, তাঁতপল্লী পাল্টে দেবে এলাকার দৃশ্যপট। ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিনিয়োগকারীরা আসবেন, এলাকাটি একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হবে। কমবে মানুষের দরিদ্রতা। উন্নয়ন ঘটবে মানুষের জীবনমানের। শুধু তাঁতপল্লীই নয়, সারা দেশেই চলমান সরকারের এমন অসংখ্য প্রকল্প। এসব প্রকল্পে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে বদলে যাবে দেশের অর্থনীতির চিত্র।