মৌলভীবাজার চারটি ইউনিয়নে সহিংসতার আশঙ্কা

6

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
নির্বাচনের দিন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম ও ভোটারদের সাথে আলাপকালে এতথ্য জানা গেছে।
তারমধ্যে রহিমপুর, শমসেরনগর, আলীনগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নসহ এই চারটি ইউনিয়ন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহিংসতা প্রতিরোধে এবং শান্তিপূর্ন নির্বাচনের লক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে চাচা ভাতিজা চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন।
চাচা বর্তমান চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুল নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে ও ভাতিজা জুনেল আহমদ তরফদার ঘোড়া মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইতিমধ্যে গত রবিবার রাতে ইউনিয়নের মুন্সীবাজারে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলার ঘটনায় উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে।
এ ঘটনার পর বর্তমান চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুলের ভাই ইমতিয়াজ আহমদ বুলবুল বাদী হয়ে থানায় মামলা রুজু করেন। ওই মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
সোমবার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পরবর্তী হামলা, পুলিশি হয়রানি ও অনাকাঙ্খিত গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন অনেক ভোটার ও সাধারণ মানুষ। এরা নির্বাচনের দিন অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হবে কি না সেটা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন।
এছাড়া শমসেরনগর ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত কোন ঘটনা না ঘটলেও নির্বাচনের দিন সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ইউনিয়নে আব্দুল মালিক বাবুল, জুয়েল আহমদসহ আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রার্থী হওয়ায় ইতিমধ্যে কেউ কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন।
জেলার মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলায় সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দলীয় নেতারা যেভাবে গোপনে বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করেছেন। সেটিও এই ইউনিয়নে চলছে। সেই প্রেক্ষাপটে এখানে প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ না থাকে তাহলে এই ইউনিয়নে সহিংসতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নে ফজলুল হক বাদশা, শাহীন আহমদ ও নিয়াজ মোর্শেদ রাজু প্রতিদ্বন্দ্বিীতায় রয়েছেন। এই তিন প্রার্থী জেলা সদর ও উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের বগলে রয়েছেন। এসব নেতারা দলীয় প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহীদের প্রাধান্য দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনের দিন পক্ষে বিপক্ষে কাজ করতে গিয়ে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব ও সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে সংঘাত ও হতে পারে ইউনিয়নের কোন কোন কেন্দ্রে।
ইসলামপুর ইউনিয়নে দুই ভাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আব্দুল হান্নান বিএনপি সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং অপর ভাই সুলেমান মিয়া আওয়ামী লীগের সমর্থনে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের ঘরে ইঁদুর থাকায় বিএনপির প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। ফলে ভোটের দিন স্বভাবত দুই দল-ই চাইবে তাঁদের প্রার্থী জয়লাভ করুক।
এক্ষেত্রে কেন্দ্র দখলেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ থাকে তাহলে যেকোন পরিস্থিতি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব বলে ভোটাররা মনে করছেন।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান অবশ্য সহিংসতার বিষয়টি আমল দিচ্ছেন না। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন খুবই নিরপেক্ষ। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা প্রস্তুত রয়েছে।