কমলগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতা ॥ এমপির গাড়ি ও নৌকার অফিসে হামলা, গানম্যানসহ আহত ২০

3

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের নৌকার প্রধান নিবার্চনী কাযার্লয়ে ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপির গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছেন আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমদ ও তার সমর্থকরা।
২ জানুয়ারী রবিবার রাত ১০টায় উপজেলার মুন্সিবাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
এমপি আব্দুস শহীদ অক্ষত অবস্থায় থাকলেও দুই পক্ষের সংঘর্ষে এমপির গানম্যান, গাড়ির চালক ও ব্যক্তিগত একান্তসহকারীসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানে গুরুতর আহত গানম্যান তরিকুল, গাড়িচালক স্বপন ও ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারমধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে সিলেট রেফার্ড করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এমপিকে নিরাপদে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদশীরা জানান, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্থানীয় এমপি আব্দুস শহীদের ছোট ভাই ইফতেখার আহমদ বদরুল নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী বিদ্রোহী বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেল আহমদ তরফদার। রবিবার রাতে ব্যক্তিগত একটি অনুষ্ঠান শেষ করে মৌলভীবাজার ফেরার পথে মুন্সিবাজারস্থ নৌকার প্রধান নিবার্চনী কাযার্লয়ের সামনে আসলে এলাকাবাসীর অনুরোধে চা খাওয়ার সময় বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেল আহমদ তরফদার তার সমর্থকদের নিয়ে নৌকার প্রধান নির্বাচনী অফিসে হঠাৎ আচরণবিধি অজুহাতে অর্তকিতভাবে দেশীয় অস্ত্র লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। তখন অফিসে বসা নৌকার লোকজন এগিয়ে গেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হামলার সময় অফিসের সাটার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাহিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জুনেল আহমদের সমর্থকরা অফিসের সামনে রাখা এমপির গাড়িতে লাটিসোটা দিয়ে আঘাত করে। সমর্থকদের হামলায় এমপি আব্দুস শহীদের গানম্যান তরিকুল, গাড়িচালক স্বপন, ব্যক্তিগত একান্ত সহকারী ইমাম হোসেন সোহেল, শ্রীমঙ্গল যুবলীগের নেতা খালেদ সাইফুল্লাহসহ উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হন।
তাদের একজনের মাথা ফেটে গেছে এবং একজনের হাত ভেঙে গেছে। পুলিশ এসে আব্দুস শহীদ এমপি নিরাপদে সরিয়ে নেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। মুন্সিবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আহতদের দেখতে কমলগঞ্জ হাসপাতালে অবস্থান করেন। পরে রাত ১২টায় শ্রীমঙ্গল নিজ বাসায় চলে যান।
এদিকে ঘটনার পর বিদ্রোহী প্রার্থী ও সমর্থকরা বাজার এলাকা থেকে সরে যান। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা আহত হয়েছেন চেয়ারম্যান জুনেল আহমদ তরফদার দাবি করেছেন।
কমলগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত সোহেল রানা বলেন, এমপি সাহেব বাড়ি যাওয়ার সময় তার গাড়িতে হামলা করা হয়। তিনি অক্ষত আছেন। তার গানম্যান ও গাড়িচালক আহত। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এঘটনায় এমপি মহোদয়ের ভাই বাদী হয়ে জুনেল আহমদ তরফদারকে প্রধান আসামী করে ৩৫ নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৩৫জন আসামী করে থানায় মামলা রুজু হয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী ইফতেখার আহমেদ বদরুল বলেন,রাতে এমপি মহোদয় বাড়ি যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে চা খাইতে গেলে,সেখানে আওয়ামী বিদ্রোহী প্রার্থী জুনেলসহ তার বাহিনীরা হামলা চালায়। এতে এমপির গ্যানম্যান ও একান্ত সহকারী সোহেলসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চলছে। এঘটনায় আমার ভাই ইমতিয়াজ আহমদ বুলবুল বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।