করোনার বুস্টার ডোজ

5

বহুল সংক্রমণ করোনা এখনও হরেক বৈশিষ্ট্যে এর অবস্থান জানান দিচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতে। নিয়মিত স্বাস্থ্যবিধি মানা থেকে শুরু করে প্রতিষেধক টিকা গ্রহণ কর্মসূচী চলমান রয়েছে। টিকা কার্যক্রমকে সকলের মাঝে সম্প্রসারিত করতে সরকার বহুমুখী কর্মপরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করেছে সারাদেশকে। তথ্য-উপাত্তে উঠে এসেছে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে ৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৮৬ জনকে। দুটো ডোজ নেয়ার জনসংখ্যা ৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ কোটি মানুষকে করোনা মহামারী থেকে সুরক্ষা দিতে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দুই ডোজের টিকা দিতে পেরেছে। কিন্তু অনেক দেশে টিকার বুস্টার ডোজ দেয়াও শুরু করা হয়েছে। সিংহভাগ মানুষ এখনও টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসতে অপেক্ষার দিন গুণছে। টিকা গ্রহণের এই সীমাবদ্ধতার মধ্যে নতুন আর এক বিপর্যয় ওমিক্রনে পরিস্থিতিকে বেসামাল করে দেয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওমিক্রন সংক্রমণ প্রতিরোধে দুই ডোজ সম্পন্নকারী নতুন করে বুস্টার ডোজ নেয়ার ঘোষণা জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চলতি মাস থেকেই বুস্টার ডোজ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিয়ে যে বুস্টার ডোজ সম্পন্ন করার কথা, সেখানে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ার তথ্যে অনেকেই হতবাক। শুধু তাই নয়, নিবন্ধনবহির্ভূত এই বুস্টার ডোজ গ্রহণ করার সংখ্যাও হিসাবের মধ্যে নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন ধরন ওমিক্রন ভাইরাসের আশঙ্কায় অনেকেই তড়িঘড়ি করে গোপনে বুস্টার ডোজ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে বয়সেরও কোন হিসাব থাকছে না। সবার আগে বুস্টার ডোজ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাই অগ্রাধিকার পাবে। যারা সরাসরি রোগীর সংস্পর্শে আসতে বাধ্য হন। কারণ, দুই ডোজের কার্যকারিতা ৬ মাসের বেশি থাকে না বলে ধারণা করা হয়। সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংক্রমণ ঝুঁকি থেকেই যায়। ফলে সংশ্লিষ্টরা বুস্টার ডোজ গ্রহণে এগিয়ে এসেছেন। তবে তাদের কোন পরিসংখ্যান নেই। এদিকে ভারত থেকে আসা এস্ট্রোজেনেকার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অনেক স্বাস্থ্যকর্মী বুস্টার ডোজ নিয়ে নিয়েছেন। তবে নিবন্ধন করে নয়। রাজনৈতিক নেতা, সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বুস্টার ডোজ নিতে সার্বিক আগ্রহী। তাদের বাধা দেয়ার ক্ষমতা সরকারী হাসপাতালের কর্মীদের নেই। বিপত্তিটা ঘটছে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং টিকা কর্তৃপক্ষকে আমলে না নেয়ার কারণে। যা স্বাস্থ্য অব্যবস্থাপনা এবং নীতি-নৈতিকতাবিরোধী। বিধিসম্মত উপায়ে এমন সব হঠকারিতা থামানো জরুরী, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সচেতন দায়বদ্ধতা।