ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক ঘোষণা থেকে সরে এলো যুক্তরাজ্য

8

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সোমবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২২ কোটি ৫৬ লাখ ১৩ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ২০ কোটি ২২ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৬ জন।
এদিকে চলতি মাস থেকে নাগরিকদের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট সঙ্গে রাখা ও প্রদর্শন বাধ্যতামূলক বলে যে ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য, তা থেকে সরে এসেছে দেশটির সরকার। স্থানীয় সময় রবিবার এক সাক্ষাতকারে বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দ জাভিদ। নাগরিকদের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট রাখা ও প্রদর্শন করার চেয়ে করোনা টেস্ট ও টিকাদান কর্মসূচীর আওতা ও গতি বাড়ানোকেই সরকার অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সামনেই শরত এবং শীতের মৌসুম আসছে। এ সময় সংক্রমণে উল্লম্ফন দেখা দেয়ারসমূহ সম্ভাবনা রয়েছে এবং তা রোধ করতে করোনা টেস্ট ও টিকাদান কর্মসূচীর সম্প্রসারণ ও গতি বাড়ানোর দিকেই আমরা মনোযোগ দিচ্ছি এবং আরও একটি কথা আমি বলতে চাই- আপাতত যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করার কোন পরিকল্পনা আমাদের নেই। প্রধানমন্ত্রী নিজে এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন।’ টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করার পর যে সনদ দেয়া হয়, তাকেই ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বলা হয় ইউরোপে।
ভারতে করোনায় আরও ২১৯ জনের মৃত্যু ॥ ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭ হাজার ২৫৪ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ১৭৫ জন। রবিবারের তুলনায় সোমবার দৈনিক মৃত্যুও অনেকটা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২১৯ জনের। এ নিয়ে ভারতে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৭৪ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা কম হওয়ায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও ফের কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সক্রিয় রোগী কমেছে ১০ হাজার ৬৫২ জন। এখন দেশটিতে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৯ জন।
কলকাতায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কোভ্যাকসিনের টিকাদান বন্ধ : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় ফের করোনা টিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার কোভ্যাকসিন না পাঠানোয় সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরটিতে টিকাদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি মজুদ তলানিতে ঠেকেছে কোভিশিল্ডেরও। তবে তা সত্ত্বেও ১০৫টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ১৭টি মেগাসেন্টার থেকে কোভিশিল্ড দেয়া হবে। রবিবার রাতে কলকাতা পৌরসভার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সুব্রত রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার কোভ্যাকসিন না পাঠানোয় শহরের ৩৯টি ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফের কোভ্যাকসিনের সরবরাহ এলে টিকাদান শুরু হবে।’ কলকাতা পৌরসভার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কোভিশিল্ডের মজুদও তলানিতে এসে পৌঁছেছে। যে পরিমাণ কোভিশিল্ড টিকা মজুদ আছে তা দিয়ে মাত্র একদিন টিকা দেয়া যাবে। যদি সোমবার রাতের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কোভিশিল্ডও না পাঠায় তা হলে মঙ্গলবার থেকে অক্সফোর্ডের আবিষ্কৃত এই টিকাটিও দেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে পূজার আগে কলকাতায় ফের উর্ধমুখী হয়েছে করোনার সংক্রমণ। এমন একটা সময়ে কোভ্যাকসিন টিকা দেয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নমুনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে মানুষকে নিরাপদ রাখতে টিকাদানই একমাত্র উপায়। কিন্তু সেই টিকার অভাব ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।