পর্যটকদের আগমনে মুখরিত সাদা পাথর

23

লবীব আহমদ কোম্পানীগঞ্জ থেকে :
দীর্ঘদিন দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকার পর যখন ১৯ তারিখে খুলে দেওয়া হলো, পর্যটকরা যেন প্রাণ ফিরে পেলেন৷ বৃহস্পতিবার দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয় কোম্পানীগঞ্জের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অপরূপ সাদা পাথর। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও সিলেট সহ সারাদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। পর্যটকদের আগমনে প্রাণ ফিরে পেয়েছে সাদা পাথর, হাফ ছেড়ে বাঁচলেন সাদা পাথরকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষেরা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে ছুটির এই দুইদিনে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে সাদা পাথরে। প্রতিদিনই ৩-৪ হাজারের কাছাকাছি মানুষের আগমন সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রে। এর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা থাকলেও মানুষ তা মানতে অনেকটাই নারাজ। অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও আবার অনেকের মধ্যে নেই স্বাস্থ্য সচেতনতা।
সাদা পাথরে প্রথমবার ঘুরতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুজন আহমেদ বলেন, ‘সাদা পাথরের নাম অনেক শুনেছি, পত্রিকা-ফেসবুকে দেখেছি। কিন্তু, আসা হয়নি। গতবছর আসার কথা থাকলেও পারিনি করোনার কারণে। আজ আর মিস করিনি। সাদা পাথর অনেক সুন্দর একটা জায়গা। এখানে আসতে পেরে পানিতে প্রচুর সাঁতার কাটতে পারলাম। সময় পেলে আবারো আসবো’।
এদিকে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র খোলায় সাদা পাথর খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি থেকে শুরু করে সাধারণ দোকানীরাও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। তবে আগের মতো আর নেই তেমন বেচা-কেনা। সাদা পাথর খেয়াঘাটে বাদাম বিক্রি করা এক হকার বলেন, ‘আগে পাথর কোয়ারীতে কাজ করতাম। সবকিছু বন্ধ থাকায় এখন সাদা পাথর এরিয়ায় বাদাম বিক্রি করি৷ সবকিছু বন্ধ থাকায় অনেকটা অভাবে ছিলাম৷ সাদা পাথর খোলায় দুইদিন থেকে আবারো বাদাম বিক্রি শুরু করি৷ কিন্তু, আগেরমতো আর তেমন চলে না।কি আর করার, বেঁচে থাকতে তো হবেই’।
সাদা পাথর খেয়াঘাটের হোটেল আল বেলার মালিক লিটন মিয়া বলেন, ‘পর্যটকেরা আসছেন সাদা পাথরে ঘুরতে। আমার হোটেলেও অনেকে দুপুরের খাবার সহ নাস্তা করছেন৷ তবে লকডাউনের আগের মতো আর ব্যবসা হচ্ছে না৷ এছাড়াও অনেকে স্বাস্থ্য সচেতনতা মানতে গিয়ে হোটেলে খাচ্ছেন না’।
সাদা পাথরে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটক করোনার ঝুঁকি থাকবে বলে ভীড় এড়িয়ে চলছেন এমনকি খেয়াঘাটের পাড়ে থাকা হোটেলেও অনেকে খাচ্ছেন না৷ এব্যাপারে কথা হয় এক ভদ্রলোকের সাথে। তিনি বলেন, ‘এমনিতেই করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। আমাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা মানা প্রয়োজন। বাসায় থেকে থেকে অনেকটা একাকিত্ব বোধ করি৷ সেজন্যেই আজ সাদা পাথরে ঘুরতে আসা। করোনা মহামারির আগে সময় পেলেই ঘুরতাম। কিন্তু, এর পর থেকে আর তেমন ঘোরা হয় না’।
সাদা পাথরে আসা সকল পর্যটক সহ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুরোধ জানিয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন আচার্য বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রচুর পরিমাণে পর্যটক আসতেছেন সাদা পাথরে। আমাদের এসিল্যান্ড মহোদয় ও সেখানে গিয়েছেন। আমরাও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনুরোধ করছি। কেননা, স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তেই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে’।