মহামারি নির্মূলে টিকা

7

করোনার মহাদুর্যোগে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো এক দুঃসহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। অতি সত্বর এ দুরবস্থা থেকে মুক্ত হবার কোন আলামত এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। দেশের গতিশীল চাকা অর্থনীতি এবং শিক্ষা কার্যক্রম অবরুদ্ধতার জালে আটকে পড়লেও বিভিন্ন খাতকে সেখান থেকে বের করে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত। উন্নয়নের ধারায় অর্থনীতিকে এই মুহূর্তে চাঙ্গা রাখতে না পারলে দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়তে পারে। শিক্ষা কার্যক্রম কখন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনায় আলোর মুখ দেখবে তাও অনিশ্চয়তার মুখে। ফলে করোনা সংক্রমণ শুধু প্রতিরোধই নয়, চিরস্থায়ী সুরক্ষায় টিকা প্রদান কর্মসূচী এ মুহূর্তে জরুরী। জাতির মেরুদ- শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও টিকার আওতায় আনতে প্রাসঙ্গিক সব ব্যবস্থা সময়ের অনিবার্য দাবি। অন্যদিকে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরও টিকাদান কর্মসূচীতে আনতে বিশেষ জোর দেয়া আবশ্যক। কারণ, পোশাক খাত থেকে রফতানি আয়ের যে বিপুল বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হয়, তাতে অর্থনীতির চাকাও সর্বদা সচল আছে। এক আবেদনে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে শ্রমিকদের টিকা প্রদানের জন্য সরকারের কাছে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পোশাক শিল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তাদের প্রত্যেককেই টিকা প্রদানের অন্তর্ভুক্ত করার যৌক্তিক দাবি জানানো হয়। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকেই পোশাক শিল্প শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতির এ বিশেষ খাতটিকে এখন অবধি গতিশীল রেখেছে। নতুন অর্থবছরে রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা আগের বছরের তুলনায় তিন শ’ কোটি ডলার বেশি। মহামারীর প্রাদুর্ভাবকে সতর্ক-সাবধানতায় সামাল দিয়েই নতুন অর্থবছরের এ রফতানি আয় ধার্য করা হয়েছে। তেমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও প্রাধান্য দিতে হবে সবার আগে।
দেশের পোশাক শিল্পকারখানায় বর্তমানে ৪২ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছে। বায়িং হাউস এবং কারখানার বিদেশী প্রায় সাড়ে আট শ’ কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের সবাইকে করোনার প্রতিষেধক টিকা প্রদান সবিশেষ জরুরী। তবে মালিক সংগঠন নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে শ্রমিকদের টিকাদান কর্মসূচী পরিচালনার আশ্বাস দিয়েছেন। যাতে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে সবাই এ কর্মসূচীর আওতায় আসতে পারে। বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আসা শুরুও হয়েছে। নতুন করে নিবন্ধনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। মহামারীকে নির্মূল করতে গেলে এর বিকল্প নেই।