ওসমানীনগরে ফার্মেসীতে থানা পুলিশের সীল, কথিত ডাক্তার আটক

10
ওসমানীনগরে উদ্ধারকৃত সরকারি প্রতিষ্ঠানের নকল সীল ও সরকারি ঔষধ। (ইনসেটে) আটককৃত কথিত চিকিৎসক

শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
ওসমানীনগর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং কথিত ডাক্তার নিরঞ্জন ধর (৫৫) কে অবশেষে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটককৃত নিরঞ্জন ধর উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের লামা গাভুরটিকি গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার লামা গাভুরটিকি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। এর আগে শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তারের নেতৃত্বে সাদিপুর ইউনিয়নের চাতলপার বাজারে ডা: নিরঞ্জন কুমার ধরের মালিকানাধীন ফার্মেসী নবিন ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান কালে নিরঞ্জন ধর নিজের ডাক্তারী পরীক্ষার সনদ ও ফার্মেসীর লাইসেন্স দেখাতেও ব্যর্থ হওয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও। জরিমানার টাকা দিতে গিয়ে ক্যাশ টেবিলের ড্রয়ার খুললে সেখানে ওসমানীনগর থানাসহ সরকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের নকল সীল পাওয়া যায়। এ সময় হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত বেশ কিছু সরকারি ঔষধ, একাধিক ব্যবহৃত ইনজেকশনের সিরিঞ্জও জব্দ করা হয়। অভিযানকালে নিরঞ্জন ধরের হেফাজতে থাকা ওসমানীনগর থানা পুলিশসহ একাধিক সরকারী প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সীলের উদ্ধারের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রট তাহমিনা আক্তার। পরবর্তীতে শনিবার রাতে ওসমানীনগর থানার এস আই নিখিল চন্দ্র দাশ বাদী হয়ে এ বিষয়ে মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে নিরঞ্জনকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, ভুয়া ডাক্তার নিরঞ্জন দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ফার্মেসী পরিচালনার পাশাপাশি এই এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে আসছে। আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় নিরীহ মানুষকে হয়রানীসহ তাঁর মালিকানাধীন ফার্মেসীকে ঘিরে গড়ে তুলেছিল অপরাধের আস্তানা। মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে শালিস বৈঠক করে টাকা ইনকামও করতেন নিরঞ্জন। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর ছায়াতলে থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নাম বিক্রি করে এলাকার মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে নানা কায়দায় টাকা-পয়সা আত্মসাতের পাঁয়তারায় লিপ্ত তিনি। ইউএনও কর্তৃক জরিমানা ও থানা পুলিশ কর্তৃক মামলা দায়েরের পর নিরঞ্জন আটকের খবর পেয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।
ইউএনও মোছা: তাহমিনা আক্তার বলেন, নিরঞ্জন সূত্রধর ডাক্তার পরিচয়ে প্রেসক্রিপশান ব্যবহার করলেও এ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। ফার্মেসীর কোন লাইসেন্স নেই। পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠানে সরকারি ঔষধ ও ব্যবহৃত সিরিঞ্জ পাওয়া গেছে। মৌখিকভাবে সতর্কতার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাৎক্ষণিক তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও একাধিক সরকারী প্রতিষ্ঠানের সীল জব্দের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ওসমানীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বণিক বলেন, কথিত ডাক্তার নিরঞ্জনের হেফাজতে থাকা থানা পুলিশসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের চারটি নকল সীলসহ বিক্রয় নিষিদ্ধ বেশ কিছু সরকারী ঔষধ জব্দ করার পর রাতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।গতকাল রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।