করোনা রোধে একযোগে কাজ করতে হবে

16

একই সঙ্গে দুটো অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক খবর মিলেছে স্বদেশ ও বিদেশ থেকে। করোনাভাইরাসের মতো ভবিষ্যতের মহামারী থেকে বিশ্বকে রক্ষার জন্য একটি বৈশ্বিক চুক্তিতে উপনীত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি লিখিত নিবন্ধে এই আবেদন রেখেছেন তারা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জার্মানির চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মেরকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানসহ ২০ জনের বেশি লিখেছেন নিবন্ধটি। এতে বলা হয়েছে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বে সবচেয়ে বড় হুমকির সৃষ্টি করেছে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের মধ্যে যেভাবে সুসম্পর্ক গড়তে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সেরকম একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। চলতি মহামারীতে প্রমাণিত যে, প্রত্যেক মানুষ নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউই নিরাপদ নন। সে অবস্থায় আগামীতে এ জাতীয় মহামারী রুখতে এবং শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে হবে বিশ্বকে। উল্লেখ্য, বিশ্বের অনেক দেশ এখন পর্যন্ত করোনার ভ্যাকসিন পায়নি। সেক্ষেত্রে এ জাতীয় মানবিক বৈশ্বিক আবেদন ও আহ্বান অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ।
অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে চলমান মহামারীসহ আর্থিক খাতে তারল্য সঙ্কট এবং ঋণের বোঝা লাঘবে সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের হিসাবে আগামী দুবছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রায় সাড়ে ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হতে পারে। এই বিপর্যয় কাটাতে একযোগে কাজ করতে হবে বিশ্বকে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে চীনের উহানে প্রথম সংক্রমণ ঘটে করোনাভাইরাসের। যা এক কথায় ভয়ঙ্কর সংক্রামক ও হন্তারক ব্যাধি হিসেবে অচিরেই আবির্ভূত হয় এবং ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। পরে এর নামকরণ হয় কোভিড-১৯। সবচেয়ে যা বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ তা হলো এর বিরুদ্ধে প্রচলিত কোন ওষুধ তথা এ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর ছিল না। তবে বাংলাদেশ বিশ্বের সেই বিরল তিন/চারটি দেশের একটি যে করোনা ভ্যাকসিন বিদেশ থেকে ক্রয় করে জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে করোনার টিকা বৈশ্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। যেটি বাস্তবায়িত হলে উপকৃত হতো বিশ্ব, টিকা পেত সব দেশ। এখন প্রয়োজন সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, যেটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বাস্তবায়িত করবে বলেই প্রত্যাশা। বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ টিকা নিলেই করোনা প্রতিরোধে গড়ে উঠবে হার্ড ইমিউনিটি তথা সর্বাত্মক সুরক্ষা। এর পাশাপাশি বিশ্বকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারেও কাজ করতে হবে একযোগে। নিতে হবে সমন্বিত পদক্ষেপ।