১০ বছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ৭৯ শতাংশ

22

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে গত ১০ বছরে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ৭৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৮ হাজার টন, সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। এ সময়ে উৎপাদন বেড়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার টন। একইসঙ্গে ১০ বছরে ইলিশ উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ দশমিক ২০ শতাংশ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাটকা সংরক্ষণসহ ইলিশ রক্ষায় নানা পদক্ষেপের কারণে উৎপাদন বেড়েই চলছে। ইলিশের উৎপাদন টেকসই করতে আগের প্রকল্পের আদলে নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। যদিও কয়েক বছর আগে বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ আসত বাংলাদেশ থেকে।
বাংলাদেশে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ইলিশের উৎপাদন সর্বোচ্চ প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছিল। চূড়ান্ত না হলেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন সাড়ে ৫ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে
মৎস্য অধিদফতরের একজন কর্মকর্তারা বলেন, ইলিশ নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি আয় ও আমিষ সরবরাহে ইলিশের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ। দেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে।
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ শতাংশ। প্রায় ৫ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত বলেও মৎস্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ ণ্ডবলেন, ‘ইলিশ রক্ষায় আইন শক্তভাবে বাস্তবায়ন করছি আমরা। সরকারের নানা উদ্যোগ থাকার কারণে ইলিশের উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী। সামনে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ৬ লাখ টন হতে পারে বলে মনে করছি।’
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন নিয়ে আগের নেয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে প্রকল্প নেয়া হয়েছে। মৎস্য অধিদফতরের ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী ণ্ডবলেন, ‘ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনাটা ভালো হয়েছে। কিছু ভালো পদক্ষেপ আমাদের রয়েছে। এ প্রোগ্রামগুলো সফলভাবে করার কারণে ইলিশ উৎপাদন বেড়েই চলছে।’
ইলিশ রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়গুলো ছাড়াও নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আগের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি। সেই কার্যক্রম আগামী অর্থবছর থেকে শুরু করতে পারে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন টেকসই করা হবে।’
জিয়া হায়দার আরও বলেন, ‘প্রকৃতিকে তো আমরা ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারব না, সেটাকে তার নিজ বৈশিষ্ট্যে রেখেই ইলিশ উন্নয়নের ব্যবস্থাপনাটা করতে চাই।’